শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ০৯:২১ অপরাহ্ন

চাল আমদানিতে শুল্ক কমছে না

চাল আমদানিতে শুল্ক কমছে না

স্বদেশ ডেস্ক:

আপাতত চাল শুল্ক কমিয়ে আমদানির দিকে এগোচ্ছে না সরকার। ভরা মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও চালের দাম এখনো বাড়তির দিকে।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্য মন্ত্রণালয় চালের শুল্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে নতুন করে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপাতত এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে।

বর্তমানে চাল আমদানিতে শুল্ক নির্ধারণ করা আছে ২৫ শতাংশ। এই শুল্কে চাল আমদানি অনেক আবেদন পড়লেও চূড়ান্ত পর্যায়ে তেমন বেশি চাল আমদানি হয়নি।

এদিকে বাজারে চালের দাম বাড়তির দিকে। এমন অবস্থায় চাল আমদানি শুল্ক কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়।

কিন্তু এই মুহূর্তে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে সরকারের উচ্চ পর্যায়। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১০ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানির প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানার চেষ্টা করলেও খাদ্যমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। খাদ্য সচিব বুধবার সচিবালয়ে অফিস করেননি। তাকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এরপর মন্ত্রণালয়ের সংগ্রহ ও সরবরাহ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব খাজা আব্দুল হান্নান যোগাযোগ করলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমার পর্যায়ে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা এখনো আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোনো নির্দেশনা এসেও থাকে সেটা মন্ত্রী মহোদয় বা সচিব স্যার জানতে পারেন, আমি জানি না।

সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক যুগান্তরকে বলেন, সরকারের কাছে পর্যাপ্ত চাল মজুত আছে। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তাই মনিটরিং করার মাধ্যমে নিজেদের চালের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশিত করতে হবে।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় চালের দাম মজুতের বিষয়টি দেখভাল করতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলেছেন।

সূত্র আরও জানায়, করোনার কারণে বিপুল পরিমাণ টাকা বিভিন্ন খাতে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত সরকার বিপুল আর্থিক চাপে থাকবে। এই পরিস্থিতিতে চালের শুল্ক কমানো হলে সরকারকে আরও বিপুল টাকা গুনতে হবে। যা এই মুহূর্তে সরকারের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে।

এদিকে বাড়তি চাহিদা পূরণে গত বছরের বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট না হওয়ায় সেই সময় সাড়ে তিন লাখ টনের বেশি চাল আনা হয়নি।

চলতি সপ্তাহে পাইকারিতে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬২ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে এই চাল বিক্রি করা হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। মাঝারি মানের চাল খুচরা পর্যায়ে বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৬০ টাকায়। এছাড়া আরও সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭২ টাকা পর্যন্ত। মোটা চাল ৪৫ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। যা এই সময়ের অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি।

উল্লেখ্য, চালের মজুতের দিক থেকে সরকার সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। বর্তমানে মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ টনের বেশি। সম্প্রতি শেষ হওয়া ডিসি সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সম্মতি আসলেই খুব কম শুল্কে চাল আমদানি হবে। কিন্তু সেই সম্মতি না আসায় আরও চাপে পড়ল খাদ্য মন্ত্রণালয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877