শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১২:১০ অপরাহ্ন

১ চিকিৎসক নিয়ে চালাচ্ছিলেন হাসপাতাল, ভাগিয়ে আনতেন রোগী

১ চিকিৎসক নিয়ে চালাচ্ছিলেন হাসপাতাল, ভাগিয়ে আনতেন রোগী

স্বদেশ ডেস্ক:

পর্যাপ্ত আইসিইউ চিকিৎসা সেবা রয়েছে, এমন আশ্বাস দিয়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল থেকে নিজের ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে আনতেন গোলাম সারোয়ার (৫৭) নামের এই ব্যক্তি। তিনি ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

একটি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর মালিকানাধীন হাসপাতালটির বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পান র‌্যাব সদস্যরা। আজ রাজধানীর কাওরান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল  মঈন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ থেকে দাবি করা টাকা দিতে না পারায় আয়েশা আক্তার নামে এক নারীর দুই যমজ সন্তানকে এনআইসিইউ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি টাকা দিতে না পারায় ওই নারীকে শারীরিকভাবে হেনস্তাও করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারোয়ার। পরে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন আয়েশা আক্তার এবং ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ওই হাসপাতালের ফার্মেসির বিল পরিশোধ করেন। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে যমজ দুই শিশুর মধ্যে একজন মারা যায়। এই ঘটনার পরপরই শিশুটির মা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। অপর শিশুকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেলের এইচডিইউতে ভর্তি করান। বর্তমানে শিশুটি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ আছে।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালে তিনি প্রাণিবিদ্যায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০০০ সাল থেকে প্রায় ৬টি (রাজারবাগ, বাসাবো, মুগদা, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায়) হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রায় এক বছর ধরে শ্যামলীতে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। আগের অভিজ্ঞতা থেকে এই হাসপাতালের সঙ্গেও দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম সারোয়ার জানান, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফুসলিয়ে এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হতো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যখনই তদারকি এবং মনিটরিংয়ের জন্য লোকজন আসতো, তখন বাইরে থেকে চিকিৎসক ও নার্স এনে সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখা হতো। অন্যান্য সময় হাসপাতালটি ফাঁকা পড়ে থাকত। চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মতো ব্যবস্থাও থাকত না।

র‌্যাব জানায়, হাসপাতাল পরিচালনার বিধি অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ৩ জন চিকিৎসক ডিউটিরত থাকার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র একজন চিকিৎসক ডিউটিতে থাকতো। হাসপাতালটিতে ২টি আইসিইউসহ ৩০টি বেডের অনুমোদন রয়েছে। তবে এই হাসপাতালে ৬টি আইসিইউ রয়েছে। অর্থাৎ ৪টি আইসিইউ বেশি। এছাড়া ভেন্টিলেটর রয়েছে ২টি। ৯টি এনআইসিইউ থাকলেও ইনকিউভিটর আছে মাত্র ১টি। ১৫টি সাধারণ বেড রয়েছে। মূলত আইসিইউ-কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করে তিনি অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877