স্বদেশ ডেস্ক:
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে তার নিজের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই ঘটনায় মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বাবুল আক্তার এখন কারাগারে আছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। আদালত আগামী ৯ জানুয়ারি অভিযুক্তের উপস্থিতিতে শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।
পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, স্ত্রীকে খুনের সঙ্গে মামলার বাদী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ ইতোমধ্যে আমরা তদন্তে পেয়েছি। এজন্য নিয়ম অনুযায়ী তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী ৯ জানুয়ারি শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ্যে আনেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর।
২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।
বাবুল আক্তার বর্তমানে কারাগারে আছেন। এদিকে বাবুল আক্তার তার দায়ের করা মামলায় পিবিআইয়ের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দেন। শুনানি শেষে আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে টেকনিক্যাল ত্রুটি আছে উল্লেখ করে অধিকতর তদন্ত করে পুনরায় প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেন। এর ফলে মিতু হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা এখন তদন্তাধীন।