বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন

ফানুস-আতশবাজিতে দেশে ২০০ অগ্নিকাণ্ড

ফানুস-আতশবাজিতে দেশে ২০০ অগ্নিকাণ্ড

স্বদেশ ডেস্ক:

ইংরেজি নববর্ষকে বরণে আতশবাজি আর রঙিন ফানুসে ঝলমলে হয়ে ওঠে মধ্যরাতের আকাশ। উদযাপনের উন্মাদনার মধ্যেই হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পড়ে ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর হটলাইন নম্বরগুলো। সারাদেশ থেকে প্রায় ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোলরুমে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশিরভাগই ঘটেছে উৎসবে ওড়ানো ফানুসের আগুনে। কয়েকটি জায়গায় আতশবাজির কারণেও আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক (ঢাকা) দিলমনি শর্মা আমাদের সময়কে বলেন, ‘রাতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দাউদাউ করে আগুন জ¦লেছে। ভবনগুলোর ছাদে মালামাল কিংবা ছোট টিনশেডের ঘরে বাগান করার কারণে ফানুসের আগুন পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। রাতে কয়েকটি জায়গায় একযোগে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে নেভায়। কয়েকটি স্থানে ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই অবশ্য নিভে যায়। আমাদের সুভাগ্য যে, কোনো বস্তিতে আগুন লাগেনি। তা হলে ক্ষয়ক্ষতি হতো ভয়াবহ। তাই এমন উদযাপনে কঠোরভাবে ফানুস ওড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।’ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হবে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দায়িত্বশীল এ কর্মকর্তা।

ফায়ার সার্ভিস ও ৯৯৯ সূত্রে জানা যায়, থার্টিফার্স্ট নাইটে রাজধানীর প্রায় ১০টি জায়গা থেকে তারা আগুন লাগার খবর পায়। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে তিনতলা ভবনে লাগা আগুন ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। উড়ে এসে পড়া জ্বলন্ত ফানুস থেকে শুক্রবার রাত ১২টা ২৪ মিনিটের দিকে মাতুয়াইল স্কুল রোডের ওই আবাসিক ভবনের ছাদে আগুন লাগে। ছাদে ফলের ঝুড়ি থাকায় সহজেই তা ছড়িয়ে যায়। এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘রাত ১২টার একটু পর তিনতলার ওই ভবনটির ছাদে আগুন ধরে যায়। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ওড়ানো ফানুস বা ফুটানো আতশবাজি থেকে সেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দারা বাড়ির ছাদে আতশবাজি ফোটান, ফানুসও ওড়ান। তার একটি ফানুস এসে ভবনটির ছাদে পড়ে। সেখানে থাকা কাগজ ও ফলের ঝুড়িতে আগুন ধরে যায়। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বাসা থেকে নিচে নেমে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এর বাইরে ধোলাইখালে কয়েকটি দোকানে লাগা আগুন নির্বাপণেও ফায়ার সার্ভিসকে কাজ করতে হয়েছে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০টি ইউনিট এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যায়। ঢাকার বাইরে থেকে আরও ১৯০টি আগুন লাগার ঘটনায় ফোন আসে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোলরুমে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর ইন্সপেক্টর আনোয়ার সাত্তার জানান, রাজধানীতে মধ্যরাতে আগুন লাগার সাতটি খবর তারা পেয়েছেন।

থার্টিফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন ঘিরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে পটকা বা আতশবাজি ফোটানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা অমান্য করেই পুরনো বছর বিদায় ও নতুনকে বরণ করতে উন্মাদনায় মাতে নগরবাসী। একযোগে ফোটানো আতশবাজির বিকট শব্দে কেঁপে কেঁপে ওঠে গোটা রাজধানী। ফানুসের আগুন ছিটকে পড়ে বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877