রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন

বিজয়ে তাদেরও ছিল অবদান

বিজয়ে তাদেরও ছিল অবদান

বিনোদন ডেস্ক:

আজ ১ ডিসেম্বর। পূর্ণ হলো গৌরবময় বিজয়ের ৫০ বছর। ১৯৭১ সালে এ মাসে গোটা জাতি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তির স্বাদ লাভ করে। দেশের এই স্বাধীনতা-সংগ্রামে এবং স্বাধীনতার পরও প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছে অনেক তারকার নাম। আমাদের আজকের আয়োজন মুক্তিযোদ্ধা সেই সব তারকাকে নিয়ে। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ

সৈয়দ হাসান ইমাম

বাংলাদেশের একজন অভিনেতা, আবৃত্তিকার এবং স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে শুরু করেন টেলিভিশনে অভিনয়। ১৯৬৬ থেকে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধপূর্ব সময়ে তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে নাটক-নাটিকা ও গণসংগীত পরিচালনা করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর হাসান ইমাম মুজিবনগরের চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নাট্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

আজম খান

বাংলাদেশের পপ ও ব্যান্ড সংগীতের সম্রাট বলা হয় তাকে। পুরো নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান। কিন্তু সংগীত জগতে তিনি আজম খান নামে পরিচিত। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ১৯৭১ সালে ২১ বছর বয়সে দেশের জন্য অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে অংশ নেন তিনি।

ফারুক

আসল নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু। যিনি চলচ্চিত্র জগতে ফারুক নামে পরিচিত। ১৯৬৬ সালে যোগ দেন ছয় দফা আন্দোলনে। সে সময় তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার বছরেই এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ে যাত্রা শুরু করেন ফারুক। শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি চলচ্চিত্রের জন্যও অনেক অবদান রাখেন।

সোহেল রানা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। তার জন্ম ঢাকাতে হলেও পৈতৃক বাসস্থান বরিশাল জেলায়। স্বাধীনতাযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন। প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে মাসুদ পারভেজ এবং অভিনেতা হিসেবে সোহেল রানা নাম ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন প্রযোজনা করেন সোহেল রানা। অভিনেতা হিসেবে অভিষেক হয় ১৯৭৩ সালে।

জসিম

প্রখ্যাত অভিনেতা আজিমের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন অ্যাকশন হিরো নায়ক জসিম। পুরো নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন। ১৯৭২ সালে দেবর ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। খল চরিত্রের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করলেও পরবর্তীকালে নায়ক হিসেবে তিনি সফলতা পেয়েছিলেন। জসিম ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে একজন সৈনিক হিসেবে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে লড়াই করেছিলেন। জসিমের মৃত্যুর পর এফডিসিতে তার নামে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়।

রাইসুল ইসলাম আসাদ

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। গেরিলাযোদ্ধা হিসেবে লড়াই করেন দেশের স্বাধীনতার জন্য। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর আগের সময়ে পুরানা পল্টন লাইনে আমাদের বাড়ি। বয়স তখন ১৮। আমি, বাচ্চু (নাসির উদ্দীন ইউসুফ) একসঙ্গেই ছিলাম। পাশাপাশি বাড়ি আমাদের। ২৫ মার্চ রাতে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনতে পাই। তখন বাড়িঘর কম ছিল এদিকে। আমরা দেখার জন্য এগিয়ে যাই। চারপাশে শুধু গুলি আর গুলি। কী ভয়াবহ ছিল সেই শব্দ! নির্ঘুম রাত কাটে আমাদের। মনের ভেতর ভীষণ জেদ চাপে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে হবে।’

আসাদুজ্জামান নূর

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। দেশ স্বাধীনের পর তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি নীলফামারী-২ আসন থেকে ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৩ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বাংলা নাট্য জগতের একজন তুখোড় অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত কোথাও কেউ নেই নাটকে বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877