শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন

ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্মতিপত্র সই

ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্মতিপত্র সই

‍স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে একটি সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্যারিস সফরে গতকাল মঙ্গলবার এই সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। সেসময় প্রতিরক্ষা খাতের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়।

এদিন প্যারিসের এলিজি প্রাসাদে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাসতেক্সের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে আসা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে দুই দেশই বিদ্যমান অশীদারিত্বকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও সম্প্রসারিত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

আর সেই লক্ষ্যে দুই দেশই আলোচনা ও সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়েছে, বিশেষ করে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে, যার সূচনা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার) এই সফরেই হয়েছে।

পাশাপাশি চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই পক্ষ। সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সম্ভব্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের মতো বিষয়ও সেখানে থাকবে। আর সে কারণে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সম্মতিপত্র স্বাক্ষরের বিষয়টিকে দুই পক্ষই স্বাগত জানিয়েছে।

গ্লাসগো ও লন্ডন সফর শেষে মঙ্গলবার প্যারিসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম দিনেই এলিজি প্রাসাদে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে তার বৈঠক হয়। দুই নেতা এক সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়া, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এসেছে দুই নেতার আলোচনায়।

তারা দুজনেই বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ফ্রান্সের সহযোগিতার কথা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্মরণ করা হয়।

ফ্রান্স ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের যে বিকাশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়েছে, তার উল্লেখ করে দুই দেশই নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে এই সহযোগিতা ‘সকল ক্ষেত্রে’ সম্প্রসারিত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

দুই দেশই রাজনীতি ও কূটনীতি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রোধ এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা বাড়ানোও যে গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়েও জোর দিয়েছে দুই দেশ।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে একটি অবাধ, মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ এলাকা হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স। এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং সমুদ্র নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রে উন্মোচনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ।

প্যারিস সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যারিস পিস ফোরামে অংশ নেবেন। ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার বিতরণসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তিনি। আগামী ১৩ নভেম্বর প্যারিস থেকে রওনা হয়ে পরদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877