স্বদেশ ডেস্ক:
বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় চাহিদামত বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন খুলে দেওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয় পলাতক রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা। নিহতের নাম বিকাশ চন্দ্র দাস (১৮)। তিনি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার শিয়ালকুন্ডি গ্রামের বিশু দাসের ছেলে।
নিহতের চাচা শচীন চন্দ্র জানান, তার ভাতিজা বিকাশ চন্দ্র সন্ধ্যা ৭টায় সাঘাটায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ড বয় আসাদুর রহমান ধলু স্ট্রেচারে করে ৩য় তলায় সার্জারি বিভাগে নিয়ে গিয়ে ৫০০ টাকা দাবি করে। কিন্তু কাছে টাকা না থাকায় বিকাশের বাবা বিশু দাস ১৫০ টাকা দিতে চাইলে সে আরও ৫০ টাকা দাবি করে। তাৎক্ষণিক সেই টাকা দেওয়ায় ওয়ার্ড বয় রেগে গিয়ে টান দিয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয়। এর পরপরই বিকাশের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ অবস্থায় তাকে অক্সিজেন লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও সে টাকা না দিলে লাগাবে না বলে জানায়। এরপর তারা নিজেরাই বিকাশের মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তী বিকাশের অবস্থা অবনতি হওয়ায় পুনরায় অক্সিজেন লাগিয়ে দেয় সে। কিন্তু শ্বাস নিতে পারছিলেন না বিকাশ। এই অবস্থা দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ওয়ার্ড বয়। পরে ডাক্তার এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করে।
বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আসাদুর রহমান ধলু কোনো সরকারি কর্মচারী না। সে মাঝে মধ্যে হাসপাতালে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। তারপরও অভিযোগে ওঠায় আমরা তাৎক্ষণিক জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার মুনীর আলীকে প্রধান করে চার সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।’
ওসি সেলিম রেজা জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তখন থেকেই ওয়ার্ড বয় দুলু পালিয়ে গেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। তাদের কাছে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।