রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কোমর ব্যথার সঠিক চিকিৎসা আছে

কোমর ব্যথার সঠিক চিকিৎসা আছে

স্বদেশ ডেস্ক:

ব্যথা সব বয়সী মানুষের কাছে অতিপরিচিত শব্দ। সবেচেয়ে বেশি পরিচিত ‘কোমর ব্যথা’ শব্দটির সঙ্গে। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। দিন যত যায়, ভোগান্তি ও কষ্টের মাত্রা তত বাড়তে থাকে। রোগীর ভোগান্তির মূল কারণ হচ্ছে, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ না করা।

কোমর ব্যথার কারণ : বেশিরভাগ রোগীই চিকিৎসকের কাছে যান বিভিন্ন ম্যাকানিকাল সমস্যা নিয়ে। যেমন- মেরুদ-ের মাংসপেশিতে আঘাত, ডিস্ক প্রোলাপ্স, মেরুদ-ের নির্দিষ্ট গঠনে পরিবর্তন ইত্যাদি। এ ছাড়া বয়সজনিত মেরুদ-ের হাড়ক্ষয় বা বৃদ্ধি, স্পনডাইলোলিসথেসিস, অস্টিওপোরোসিস, মেরুদ-ের স্নায়বিক সমস্যা, এনকাইলজিং, স্পনডাইলোসিস, টিউমার, ক্যানসার, বোন টিবি, পেটের বিভিন্ন অঙ্গের রোগ বা ইনফেকশন, বিভিন্ন স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা, মেরুদ-ের রক্তবাহী নালির সমস্যা, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, মেদ বা ভুঁড়ি, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি কারণেও কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে। গড় আয়ু বৃদ্ধি, কর্পোরেট পেশা, নগরায়ণ, শরীরচর্চার অভাব, বেশি পরিশ্রম, শ্রমিক পেশাজীবী, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার, শারীরিক দুর্ঘটনা, দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকা, কাজের সময় সঠিক দেহবস্থান মেনে কাজ না করা ইত্যাদি কারণেও কোমর ব্যথা হতে পারে।

বোঝার উপায় : যে কোনো ব্যথার চিকিৎসার আগে জানা প্রয়োজন, রোগীর কেন ব্যথা হচ্ছে বা ব্যথার কারণ কী? বেশিরভাগ চিকিৎসকই রোগীর এক্স-রে বা এমআরআই দেখে চিকিৎসা-প্ল্যান করে থাকেন, যা রোগীর সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার অন্তরায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রথমেই প্রয়োজন রোগীর স্প্যাসিফিক ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয়। ফিজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট করে নির্দিষ্ট কোন মাসল, নার্ভ, লিগামেন্ট অথবা অন্য কোনো স্ট্রাকচারে সমস্যা আছে কিনা, সেটি নির্ণয় করা। পরবর্তীকালে প্রয়োজন অনুযায়ী রেডিওলজিক্যাল ও প্যাথলজিক্যাল ফাইন্ডিংসের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো। কারণ স্প্যাসিফিক ডায়াগনোসিস ছাড়া সঠিক চিকিৎসা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে বর্তমানে মাস্কুলোস্কেলেটাল আল্ট্রাসনোগ্রাফি গুরত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই এবং খরচও তুলনামূলকভাবে কম।

আধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা : ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে কোমর ব্যথার রোগীর শুধু ব্যথা কমবেই না, তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যেতে পারবেন। ফিজিওথেরাপি গ্রহণ মানেই বিভিন্ন যন্ত্রপাতি লাগিয়ে হিট দেওয়া নয় এবং তা বাস্তবসম্মতও নয়। আপনার কোমর ব্যথার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে ম্যানুয়াল থেরাপি, যেমন- বিভিন্ন মোবিলাইজেশন, ম্যানিপুলেশন টেকনিক, মায়োফেসিয়াল রিলিজ, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, স্ট্রেথেনিং এক্সারসাইজ, ড্রাই নিডেলিং গ্রহণ করে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যেতে পারে। ইলেকট্রোথেরাপি, যেমন- লেজার, আল্ট্রাসাউন্ড, ম্যাকানিক্যাল ট্রাকশনের সহায়তাও নেওয়া যেতে পারে। একই সঙ্গে ব্যথা কমে যাওয়ার পর ফিজিওথেরাপিস্টের অধীনে মিনিমাম ২ সপ্তাহ এর পূর্ণ রিহ্যাবিলিটেশন প্রয়োজন। কোমর ব্যথার রোগীর সঠিক ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন ছাড়া কখনই পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

লেখক : ফিজিওথেরাপি ও বার্ধক্য বিশেষজ্ঞ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877