স্বদেশ ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চুল বড় রাখার কারণে গত রোববার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথমবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
এদিকে, এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজমুল নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী লজ্জায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। ওই সময় সেখানে একই বিভাগের সহকারী প্রক্টর রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি উপস্থিত ছিলেন। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ না করে সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, সোমবার দুপুরে ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা শুরুর আগে লাঞ্ছিত শিক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করেন। তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর ফটকে জমায়েত হন। এ সময় একটি পক্ষ তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ও চাপ দিয়ে সবাইকে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। এরপর থেকে ওই শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই এ বিষয়ে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে তাদের বকাঝকা করেন। পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় আগে থেকেই দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। এভাবে তাদের লাঞ্ছিত করার পর ওই শিক্ষক জোর করে তাদের পরীক্ষা দিতেও বাধ্য করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, ‘ঘটনাটি ২৬ সেপ্টেম্বরের। পরে আবার সমাধানও হয়েছিল। কিন্তু ওই শিক্ষক ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের নাকি আবারও বকাঝকা করেন। এ ঘটনায় সোমবার রাতে এক শিক্ষার্থী লজ্জায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে সে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে শুনেছি।’
এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার (ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’