শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:২৪ অপরাহ্ন

মাথায় গুলি করে চোখ তুলে নেয় তালেবান, ভয়াবহ বর্ণনা আফগান নারীর

মাথায় গুলি করে চোখ তুলে নেয় তালেবান, ভয়াবহ বর্ণনা আফগান নারীর

স্বদেশ ডেস্ক:

হঠা& করেই থমকে যায় আফগানী খাতেরা হাশমির দৈনন্দিন জীবন। আর পাঁচটা দিনের মতো সেদিনও কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন খাতেরা হাশমি। ক্লান্ত, অবসন্ন। কিন্তু বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়েছিল তিন-চার জন। যাদের দেখেই শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায় খাতেরার, কারণ ওরা তালেবান।

এর পরের ঘটনা এক ঝটকায় বদলে দেয় খাতেরার জীবন। লন্ডভন্ড হয়ে যায় সংসার। সম্প্রতি এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই বিভীষিকাময় দিন মনে করেছেন খাতেরা। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর কীভাবে ওই তিন-চারজন তালিবান প্রথমে তাকে ছুরি মারে, তারপর সরাসরি মাথায় গুলি! একেবারে শেষে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে বের করে নেওয়া হয় খাতেরার একটি চোখ। মৃত্যু হয়েছে ভেবে তালেবান জঙ্গিরা তাকে সেখানেই ফেলে চলে যায়। কিন্তু মারা যাননি খাতেরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে কাবুলের হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি আসেন ভারতে। সেই থেকে ভারতেই আছেন আফগান পুলিশের প্রাক্তন ওই নারী কর্মকর্তা। তবে তার সন্তানরা এখনো আফগানিস্তানে।

সন্তানের সাথে খাতেরা হাশিমি
সন্তানের সঙ্গে খাতেরা হাশমি

 

এই সন্তানদের নিয়েই দুশ্চিন্তায় কাটছে খাতেরার বর্তমান দিনগুলো। সাক্ষাৎকারে খাতেরা জানিয়েছেন, এখন প্রতি দিন সকাল-সন্ধ্যায় তালিবান বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বাচ্চাদের বলছে, মা-বাবা না ফিরলে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। বিগত ৯-১০ দিন বাচ্চাদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারেননি খাতেরা। কী হল তাদের? তালিবানের ভয়ে লুকিয়ে পড়ল কোথাও, নাকি তালিবানের হাতেই পড়তে হলো? চিন্তায় পড়েছেন দুই সন্তানের মা খাতেরা।

নিজের জীবনের আরও একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন খাতেরা। জানিয়েছেন, আফগান পুলিশে কাজ নেওয়া পছন্দ ছিল না খাতেরার বাবার। বাবার বারণ উপেক্ষা করেই নাম লিখিয়েছিলেন পুলিশে। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জানতে পারেন, বাবাও ছিলেন তালেবানের দলে, গোটাটা আগে থেকেই জানতেন। ‘আব্বু’কে ক্ষমা করতে পারেননি খাতেরা। খাতেরা বলছেন, ‘‘তালেবান একই আছে। কোনো বদল নেই। আজও তালেবানের মূল লক্ষ্য নারীরা। আজও আফগানিস্তানে নারীদের সবচেয়ে বড় অপরাধ বাড়ির বাইরে বের হওয়া।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877