স্বদেশ ডেস্ক: যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলের ২৮টি ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যুমনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই জেলার নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলসহ সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অপরদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ডুবে গেছে এসব অ লের শত শত একর ফসলি জমি।
জেলা প্রশাসক ডা. ফারুক আহম্মেদ জানায়, বন্যা দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে শাহজাদপুরে ৫ টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কাজিপুরে ১০ টন চাল ও ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে ১২ টন চাল আর নগদ ১ লাখ টাকা করে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম মানবজমিনকে জানান, বন্যা কবলিত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বরাত দিয়ে জানান, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ২৮টি ইউনিয়নের প্রয় শতাধিক গ্রামের কমপক্ষে ৩ হাজার পরিবারের ১৫ হাজার লোকজন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, ৩৮২টি বাড়িঘর আংশিক ও পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের ১৩৯টি আশ্রায় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। ৫টি উপজেলায় ১২৫ মেট্রিক টন ক্ষয়রাতি চাল এবং ৫ লাখ নগদ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের মজনু শেখ বলেন, আমরা যমুনা নদীর মাঝে বসবাস করি। বন্যার পানিতে সবার আগে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবার ভাদ্রুরে বানে আমর চার বিঘা জমিতে ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে। গরু ছাগল নিয়ে যাওয়ার কোন জায়গা নাই। তাই এখানেই পড়ে আছি পানির মধ্যে। এখনো কোন ত্রাণ সহায়তা পাইনি।
চৌহালী উপজেলার চর সলিমাবাদ গ্রামের জাফর সরকার বলেন, বাপ দাদার ভিটা কুড়ি বছর আগেই যমুনা নদী খেয়ে ফেলেছে। অনেক কষ্ট করে এখানে একটা বাড়ি করেছিলাম সেটাও আজ যমুনা গিলে খাইলো। আগুনে পুরে গেলে ভিটা থাকে কিন্তু নদীতে ভেঙ্গে গেলে কিছুই থাকেনা। আমরা ত্রাণ সহয়তা চাই না। চাই তীর রক্ষা বাঁধ। এখন ছেলে মেয়ে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে কোথায় যাবো কোন জায়গা খুজে পাচ্ছি না।