স্বদেশ ডেস্ক:
বগুড়ার শিবগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের শরিফপুর ইউনিয়নে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৬) তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণের মামলায় দুই আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। গতকাল এ আবেদন করে তাদের জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবেদনের শুনানি হয়নি। এদিকে ময়মনসিংহের ভালুকায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
শিবগঞ্জে ১২ বছরের মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্বহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছের এলাকাবাসী। তারা বলছেন, একটি হেফজ মাদ্রাসা থেকে রাত আটটায় এক ছাত্রী একা বের হয়ে গেল, অথচ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না, এটা মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। কারণ আলাদীপুর পশ্চিমপাড়া হাফেজিয়া নামে ওই মাদ্রাসায় কমপক্ষে ১২০ ছাত্রী আবাসিকে থেকে লেখাপড়া করে। ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফরিদুল মুন্সীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল বিকালে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বগুড়া : শিবগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় দুজন আসামি হলেও রফিকুল ইসলামের ছেলে দুলাল ইসলাম একমাত্র ধর্ষক বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। অপর আসামি আলম মিয়ার ছেলে মিনহাজুল মিয়া তার সহযোগী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুলাল ও মিনহাজ দুই বন্ধু। দুলালের বাবা রফিকুল ইসলাম জামায়াত কর্মী। দুলাল ডিশের লাইনম্যান। তিনি বিবাহিত। তার দুই সন্তান রয়েছে। আগে থেকেই তার চারিত্রিক ক্রটি রয়েছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠেছিল। একই গ্রামে বাড়ি হওয়ায় মিনহাজ ভালো বন্ধু ছিল দুলালের। মিনহাজ স্থানীয় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। ঘটনার পর থেকেই দুজন পলাতক রয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা
শিবগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত উল্লাহ জানান, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার রাতেও কয়েক জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু আসামিদের পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম সম্পা জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের দায়িত্ব অবহেলা অথবা গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ওই ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে পাশেই নানির বাড়ি আলাদীপুর পূর্বপাড়ায় যাচ্ছিল। ওই সময় দুই যুবক তার পথরোধ করে। পরে পাশের কলাবাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় শনিবার মেয়েটির বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভালুকা : মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মল্লিকবাড়ী শহীদ নাজিমউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলে আসা-যাওয়া ও বাড়ির আশপাশে একা পেলেই প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিত প্রতিবেশী নয়নপুর গ্রামের ইছব আলীর ছেলে জুয়েল। মেয়েটি গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নানার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিল। পথে জুয়েল তাকে ঝাপটে ধরে পাশের আখ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে জুয়েল পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গতকাল মেয়ের বাবা বাদী হয়ে জুয়েলকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
নোয়াখালী : বেগমগঞ্জে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান জানান, গত শুক্রবার বিকালে অনলাইন পরীক্ষার নোট নিতে এক বান্ধবীর বাড়িতে যাচ্ছিল মেয়েটি। পথে অভিযুক্ত আবদুর রহমান তার মুখ চেপে ধরে নির্মাণাধীন একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বন্ধু ইব্রাহিমকে ফোনে ডেকে আনে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত দুজন ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং তা তাদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। মাগরিবের আজানের পর আবদুর রহমান ওই ছাত্রীর কানের দুল ও নাকফুল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ওই ফাঁকা ঘর থেকে বের করে দিয়ে তারা চলে যায়। রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ শনিবার ভোরে চন্দ্রগঞ্জ এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল তাদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়।