স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিকে তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেছে সিআইডি।
আজ শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে আদালতে আনা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক (নি.) কাজী গোলাম মোস্তফা তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে আজ দুপুর আড়াটার দিকে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের উপর শুনানি হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বনানী থানার মাদক আইনের ওই মামলায় তৃতীয় দফায় এক দিন রিমান্ডে নিয়ে এ চিত্রনায়িকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম এ রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক (নি.) কাজী গোলাম মোস্তফা ওইদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পরীমনিকে রিমান্ডে নিয়ে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের শেষ দিকে এ আসামি মামলার ঘটনা ও ঘটনার নেপথ্যে মূল হোতাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে তার দেওয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পরীমনিকে ইতিপূর্বে আদালতের আদেশে পুলিশ রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদে যে সকল তথ্য দিয়েছে তা সঠিকতাসহ মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্যের মজুদ উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসার পিছনে অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজে বের করার জন্য পুনরায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।’
আবেদনে আরও বলা হয়, তাকে (পরীমনি) রিমান্ডে পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসায়ী মূল হোতাদের গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্যের অবৈধ উৎসসহ অপরাপদের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে। পরীমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অন্তরালে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে মর্মে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে পরীমনি ও তার ম্যানেজারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার আগে গত ৫ আগস্ট পরীমনি ও রাজ এবং তাদের ম্যানেজারদের মাদক মামলায় চারদিন করে ও গত ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুদিন করে রিমান্ডে পাঠান আদালত।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার পরপরই বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় পরীমনির বাসা থেকে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক স্লট এলএসডি এবং একটি পাইপ উদ্ধারের কথা বলা হয়। ওই ঘটনায় র্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান মাদক আইনে একটি মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, পরীমনি এসব মাদকদ্রব্য কবির নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন। মামলায় কবিরের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা উল্লেখ নেই।
একই মামলায় আবার র্যাব দাবি করেছে, চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যে ধারায় পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারলে তার সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
আরও উল্লেখ্য, গত জুনে রাজধানীর আশুলিয়ায় অবস্থিত বোট ক্লাবের ঘটনায় আলোচনায় আসেন নায়িকা পরীমনি। আশুলিয়ার এ ক্লাবে গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গত ১৪ জুন তিনি ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী পরিমনির বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমি গ্রেপ্তার হন। সম্প্রতি নাসির উদ্দিন আহমেদ জামিন পেয়েছেন।