স্বদেশ ডেস্ক:
আফগান বাহিনী শিগগিরই তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিকে তালেবান হামলার ঝুঁকিতে আফগানিস্তান ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে দেশটির হাজার হাজার নাগরিক।
আফগান সেনাদের হটিয়ে তালেবানরা সীমান্ত এলাকার ৯০ ভাগই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একে পুরোপুরি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। সীমান্ত এলাকা এবং প্রধান প্রধান শহর ও মহাসড়ক এখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি তাদের।
এ অবস্থায় তালেবানদের ঠেকাতে পুরো আফগানিস্তান জুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আফগান সরকার।
এরইমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানদের জন্য ১০ কোটি ডলার জরুরি সাহায্য তহবিলের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া আফগানিস্তানে পরিষেবা এবং বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের জন্য আরও ২০ কোটি ডলার জরুরি সহায়তা দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
তালেবানদের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় দেশ ছেড়ে তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান সীমান্তে আশ্রয় নিচ্ছেন আফগানরা। এ অবস্থায় তালেবান হামলার ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের বিশেষ অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরেরও উদ্যোগ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
দেশটির ১৮ হাজারের বেশি নাগরিক মার্কিন অভিবাসনের জন্য আবেদন করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের অনুগত আফগান নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত ৮ হাজার বিশেষ ইমিগ্রেশন ভিসা বরাদ্দের অনুমতিসংক্রান্ত এক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ।
এদিকে পেন্টাগন (মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ) বলছে, প্রথম দফায় প্রায় আড়াই হাজার আফগানকে ফোর্টলি স্থাপনায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বা বাইরের কোনো মিত্র দেশে প্রথমে স্থানান্তর করে অভিবাসন আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হবে।
গত সপ্তাহে পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মিল্লেই বলেন, তালেবান কৌশলগতভাবে এগিয়ে আছে। কাজেই আফগানিস্তানে তালেবানের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি তিনি একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না। কিন্তু এটা অপরিহার্য নয় বলেও মন্তব্য করেন এ মার্কিন জেনারেল।
দুই দশক আগে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা দেশটিতে ইসলামি শাসন কায়েম করে। তারা নারীদের শিক্ষাবঞ্চিত করে এবং তাদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়া নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। এতে মার্কিন বাহিনী চলে যাওয়ার পর ফের তালেবান ক্ষমতায় আসা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে কয়েক হাজার আফগান, যারা মার্কিন বাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে আবেদন করেছেন। ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর তালেবানের দমনপীড়নের আশঙ্কা থেকেই তারা আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটি থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর ৯৫ শতাংশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। যা আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।