স্বদেশ ডেস্ক:
ঈদযাত্রায় নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা একটি নিয়মিত দৃশ্য। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য আকাশপথকেই বেছে নেন অনেকে। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত নগরী ছেড়ে আপনজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চড়া দামেও টিকিট কিনতে দ্বিধা করেন না যাত্রীরা। চাপ সামলাতে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি বাড়তি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেও চাহিদা অনুযায়ী টিকিট জোগাতে পারে না বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন একটি টিকিটের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় তীর্থের কাকের মতো। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। কিন্তু মহামারী করোনা পাল্টে দিয়েছে এবারের ঈদযাত্রার সেই দৃশ্যপট। কোরবানি ঈদে আকাশপথে নেই যাত্রীদের সেই চিরচেনা ভিড়।
বিমানসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাত্রীর চাপ তো দূরে থাক, উল্টো অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী অধিকাংশ বিমান উড়ে যাচ্ছে ২০ শতাংশ আসন খালি রেখেই। তবে ঈদের আগে চাপ না থাকলেও পরের দুদিন অর্থাৎ আগামী শুক্রবারের টিকিটের জন্য চলছে হাহাকার।
বেশি দাম দিয়েও মিলছে না কাক্সিক্ষত আসন। এদিকে আগামী ২৩ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। কী থেকে কী হয়- এ চিন্তায় লকডাউন শুরুর আগের দিনই কর্মস্থল বা গন্তব্যে ফিরতে যাত্রীরা শুক্রবারের টিকিটের জন্য ভিড় করছেন। করোনায় শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের চিত্রই পাল্টায়নি; পাল্টে গেছে বিমানবন্দর এলাকার দৃশ্যও। আগে এই সময়ে মানুষ আর যানবাহনের চাপে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা থাকলেও এখন সেখানে চিরচেনা সেই উপচেপড়া ভিড় নেই। গতকাল রবিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা ঘুরে এমনটিই দেখা গেছে।
বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘করোনার আগে ঈদযাত্রায় যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হতো। নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি বাড়তি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেও যাত্রীদের চাহিদামতো টিকিট দেওয়াটা ছিল দুরূহ। কিন্তু এখন বাড়তি চাপ দূরে থাক ২০ শতাংশ আসন খালি যাচ্ছে। তবে ঈদের পর ফিরতি ফ্লাইটের আসনের জন্য চাপ রয়েছে।’ অভিন্ন মন্তব্য করেছেন আরও কয়েকটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারাও।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের ডিজিএম তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘অন্য বছর এ সময়ে আমাদের এয়ারলাইন্সে টিকিটের জন্য হাহাকার থাকলেও এবার চাপ একেবারই কম। তবে ফিরতি ফ্লাইটের টিকিটের জন্য যথেষ্ট চাপ রয়েছে।’
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ‘করোনাকালে যাত্রী ও তাদের পরিচিতজনরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন- এ জন্য আমরা সচেষ্ট রয়েছি। এ বিষয়ে প্রতিনিয়ত প্রতিটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।’