স্বদেশ ডেস্ক: নেত্রকোণার দুর্গাপুরে মাদকসেবী স্বামীর নির্যাতনে এক গৃহবধূ ১১ মাসের বাচ্চা নিয়ে পাঁচ দিন ধরে বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সম্প্রতি গৃহবধূ শামসুন্নাহারকে (৩৫) মারধর করে মুখের সামনের অংশের একটি দাঁত ভেঙে ফেলেন স্বামী মিলন মিয়া (৪৫)। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার (১২ জুন) দুপুরে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফিরে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর, গলাটিপে হত্যা চেষ্টার ঘটনাটি ঘটায়। শুধু তাই নয়, ১১ মাসের শিশুকে বিড়ির আগুন দিয়ে গাঁ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যানচালক। গৃহবধূ শামছুন্নাহার গ্রাম্য সালিসে কোনো সুফল না পেয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে দুর্গাপুর থানায় মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন থানার ডিউটি অভিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিলন মিয়া।
শিশুকে কোলে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মদ পান করে আমাকে গলাটিপে হত্যা করতে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। আমার সন্তান সায়াদকে বিড়ির আগুন দিয়ে শরীর পুরে ফেলার চেষ্টা করে। প্রতি রাতে মদ খেয়ে এসে মারধর যেন নিত্যদিনের চিত্র। আমি আর পারছি না।’
‘কোলের সন্তানের দিকে থাকিয়ে মরতেও পারছি না। “আমার টাকা দিয়ে মদ খাবো, কার বাপের কি আসে যায়” বলে নানা ধরনের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে সারাক্ষণ। স্বামীর এহেন আচরণে আমার একমাত্র মেয়ে মিনারা খাতুনকে (১৫) অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ দিতে বাধ্য করেছে। আর কত নির্যাতন সহ্য করব, হয় ওর বিচার কইরা দেন, নইতো আমাকে বিষ কিনে দেন’ বলেন গৃহবধূ শামসুন্নাহার।
স্ত্রীকে নির্যাতনের বিষয়ে মিলন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মদ খাই, এটা নিয়ে আপনার মাথা ঘামানোর দরকার আছে। স্বামীর স্ত্রীকে মারধর করার অধিকার রয়েছে, তাই মারধর করি।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, ‘মিলন একজন মাদকসেবী। তার স্ত্রীকে মারধরের বিষয়টি আমাকে একাধিকবার জানিয়েছে। তবে মিলন গ্রাম্য সালিসের পর আরও বেপরোয়া হয়ে পড়ে।’ দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহনুর-এ আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। অভিযুক্তকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’