স্বদেশ ডেস্ক:
চাঞ্চল্যকর ঈশ্বরদী শহরের রূপনগর কলেজপাড়া নিবাসী ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ হত্যার জটল খুলেছে। দেবর সাব্বির আহমদকে নিয়ে স্ত্রী মীম খাতুন ভাড়া বাসায় বালিশ চাপা দিয়ে শাকিল আহমদকে হত্যা করেছেন। সাব্বিরের সঙ্গে মীমের অবৈধ সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন শাকিল আহমদ। গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান ও ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাব্বির আহমদ ও মীম খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক তদন্ত ও আসামিদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়; সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক কিছু বিবাদ ও পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে শাকিল গত ১৯ মে স্ত্রী মীমকে নিয়ে ঈশ্বরদী শহরের রূপনগর কলেজপাড়া মহল্লায় জনৈক আহসান হাবীবের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন। এতে মীম এবং সাব্বির একে অপরের থেকে কিছুটা দূরে চলে যান। তাতে তারা শাকিলের প্রতি মনে মনে ক্ষিপ্ত হন এবং শাকিলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সে অনুযায়ী মীম গত ২৭ মে রাত ১০টার দিকে পানির সঙ্গে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট গুঁড়া করে মিশিয়ে শাকিলকে খাওয়ান। পরদিন ২৮ মে শাকিল সারাদিন বাসায় শুধু ঘুমাতেই থাকে। সাব্বির সন্ধ্যার পর শাকিলের ভাড়া বাসায় যাবে মর্মে আগেই মীমকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছিল। সাব্বির গোপনে ওই বাসায় যায়। তখনো শাকিল ঘুমের ওষুধের প্রভাবে খাটের ওপর শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। সাব্বির এবং মীম পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সোফা সেটের কুশন বালিশ নিয়ে শাকিলের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে এবং শাকিলকে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর ফলে শাকিল তেমন প্রতিরোধ করতে পারেনি।
ওসি আরও জানান, শাকিল হত্যার বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির ওড়না দিয়ে মীমের দুই পা, শাকিলের পাঞ্জাবি দিয়ে দুই হাত এবং মীমের ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে বাইরে দরজার কাছে রেখে ঘরের দরজা বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে সাব্বির মীমের সঙ্গে গোপনে কথা বলার জন্য তাকে দেওয়া মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায় এবং বাসার মেইন গেটের চাবি পাশের বাসার দেয়ালে রেখে দেয়।
সাব্বিরের কাছ থেকে মীমের কথা বলার গোপন মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় আদালতে রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, তা নিশ্চিত হতে আসামি সাব্বিরকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দ্রুততম সময়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে জানান ওসি আসাদুজ্জামান।