শনিবার, ২৫ মে ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকাদানে অনেক চ্যালেঞ্জ

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকাদানে অনেক চ্যালেঞ্জ

স্বদেশ ডেস্ক:

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েও গত দুই মাসে তা সম্পন্ন করা যায়নি। এনআইডি বাধ্যতামূলক হওয়ায় টিকার নিবন্ধনে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। তা ছাড়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের না দিয়ে শুধু আবাসিকদের টিকা দিলে করোনার বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর প্রতিরোধ গড়া যাবে তা-ও নিশ্চিত নয়। আরও একটি বড় সমস্যা দেশে টিকার সংকট। সব মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকাদান প্রশাসনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ১২০টি আবাসিক হলের ১ লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের পাশাপাশি এসব হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও টিকার আওতায় এনে হল খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলছে- হলগুলোয় ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী থাকেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তাদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আবাসিক হলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীসহ ১ লাখ ৩ হাজার জনের তালিকা করা হয়েছে। আপাতত টিকাদানের জন্য তিনটি অ্যাফিলিয়েট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিবেচনায় আনা হয়নি।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গত বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান, আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। এদিকে গত সোমবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউজিসি

ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে। টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শিগগিরই বিশেষ প্রক্রিয়ায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। একই সঙ্গে অনলাইন ও সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ইউজিসির ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের বড় তিনটি অ্যাফিলিয়েট বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫৭ জন। শিক্ষক ১৫ হাজার ২৯৩ জন। এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৭১ জন, শিক্ষক ১ লাখ ১ হাজার ৩৩৬। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৫ লাখ ১৯ হাজার ৬১৩, শিক্ষক ১৩৭ জন। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৬ জন এবং শিক্ষক ৪ হাজার ১৫২ জন। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ৩৪ হাজার ৫৭১ জন। এ ছাড়া ৯৪টি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৬০ জন। শিক্ষক ১৬ হাজার ৭০ জন ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৩ হাজার ১৯৫ জন। সব মিলিয়ে দেশে বিশ^বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষার্থী ৪২ লাখ ২৫ হাজার ১৩৭ জন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৬০২ জন।

টিকাদান প্রসঙ্গে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ছেলেমেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একইসঙ্গে পড়বে, চলাফেরা করবে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ টিকার বাইরে থাকলে তা সবার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে। এ জন্য আমরা চাই সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হোক। টিকাদান কার্যক্রমে হলের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমরা সরকারের কাছে সুপারিশ করছি, আবাসিক-অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে টিকাদানের ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এনআইডির পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট আইডি গ্রহণ করে টিকার নিবন্ধনের ব্যবস্থা হোক। তিনি বলেন, আমরা শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবছি। এর বাইরে তো অন্যান্য বিশ^বিদ্যালয়ে আমাদের বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থী আছে। তাদের বিষয়টিও ভাবা উচিত।

সোমবারের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। টিকার ক্ষেত্রে হলে থাকা শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। পরবর্তীতে টিকা পাওয়া সাপেক্ষে ধাপে ধাপে বাকি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষামন্ত্রীকে জানান, এখন যত টিকা আসবে, সেখান থেকে ফ্রন্টলাইনারদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও অগ্রাধিকার পাবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877