স্বদেশ ডেস্খ:
নাইজেরিয়ার নিজার প্রদেশের একটি মাদ্রাসার প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছে বন্দুকধারীরা। অপহরণের সময় তারা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে, আরেকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার ঘটনাটি ঘটে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার পর স্থানীয় সরকার এক টুইট পোস্টে শিক্ষার্থীদের অপহরণের ঘটনাটি প্রকাশ করে নাইজেরিয় কর্তৃপক্ষ। পোস্টে বলায় হয়, ওই মাদ্রাসা থেকে মোট কত শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে, তা পরিস্কার নয়।
নাইজেরিয় সংবাদমাধ্যমে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে উল্লেখ করা হয়, অস্ত্রধারীরা মোটরসাইকেলে করে পুরো শহর চষে বেড়ায় এবং এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। মানুষজন তাদের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়ার পর তারা স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে। স্কুলটিতে ছয় বছর থেকে শুরু করে ১৮ বছর ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করে।
নিজার প্রদেশের ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, তিনি জানিয়েছে কমপক্ষে ১৫০ জন শিক্ষার্থীকে বন্দুকধারীরা গুলি চালিয়ে নিয়ে গেছে। তবে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে ২০০ শিক্ষার্থীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলায় দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং এতে একজন মারা গেছে। এ ছাড়া গাড়িতে করে ঘুরছিলেন এমন বেশ কিছু মানুষকেও অপহরণ করা হয়েছে।
আফ্রিকায় দেশটিতে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণের ঘটনা ওই এলাকায় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। দেশটিতে স্কুলে হওয়া হামলাগুলোর মধ্যে এটা সর্বশেষ ঘটনা বলে নিশ্চিত করেছে নাইজেরিয়ার কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারিতে জামফারা স্টেটের জাঙ্গেবে এলাকার একটি আবাসিক স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল অস্ত্রধারীরা। তাদের বেশিরভাগকেই অবশ্য পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
নাইজেরিয়ায় থাকা বিবিসির প্রতিবেদক মায়েনি জোনস বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মুক্তিপণের জন্য অপহরণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। তেজিনায় এই হামলা এমন দিনে ঘটলো যার আগের দিন প্রতিবেশী কাদুনা প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হলো। গত ডিসেম্বর থেকে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চলে শিক্ষার্থী অপহরণের কমপক্ষে ৬টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮০০ এর বেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীদের অপহরণ করা হয়। তেজিনা কাগারা শহরেও গত ফেব্রুয়ারিতে ২৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল।
২০১৪ সালে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চিবক শহরে বোকো হারাম কর্তৃক ২৭৬ জন ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনা ঘটার পর বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।। তবে সাম্প্রতিক হামলাগুলো সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলোর কাজ বলে ধারণা রয়েছে