স্বদেশ ডেস্ক:
আকাশ থেকে মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমানের সাহায্যে যাত্রীবাহী বোয়িং বিমান নামিয়ে সাংবাদিক গ্রেপ্তারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্গত বিভিন্ন রাষ্ট্র নেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। তার বিরুদ্ধে নিন্দা-সমালোচনার মুখে এবার পশ্চিমা দেশগুলোর উপরই ক্ষোভ ঝাড়লেন লুকাশেঙ্কো। নিজ দেশের সংসদে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, সমালোচকরা বেলারুশকে ‘গলা টিপে’ হত্যা করতে চায় এবং এ জন্য তারা ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো গতকাল বুধবার সংসদের ওই আলোচনায় আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো বেলারুশের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলে নিজেদের ক্ষীণ সাধারণ জ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছে। এবং এ ক্ষেত্রে তারা অনেক ‘রেড লাইন’ পার করে ফেলেছে।
গত রোববার গ্রিস থেকে লিথুনিয়াগামী রায়ানএয়ারের একটি উড়োজাহাজ যুদ্ধবিমানের পাহারায় জোর করে মিনস্ক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করিয়ে নেক্সটা মেডিয়ার সাবেক সম্পাদক রায়ান প্রোতেসেভিচকে গ্রেপ্তারের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর এই প্রথম বেলারুশের প্রেসিডেন্ট এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জনসম্মুখে এসব কথা বললেন।
সাংবাদেক রায়ানের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিমান নামিয়ে যে সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে তিনি এক ‘রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের’ পরিকল্পনা করে আসছিলেন।
আকাশ থেকে বিমান নামানোর কারণ হিসেবে ‘হামাসের বোমার হুমকি’ ছিল বলে দাবি করছে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ। এই হুমকির উদ্ভব সুইজারল্যান্ডে হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন লুকাশেঙ্কো। অবশ্য, সুইস কর্তৃপক্ষ তাদের এক বিবৃতিতে হুমকির বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে। তারপরও বেলারুশ প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, বোমার হুমকিটি সত্যই ছিল এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে হতে পারত।
লুকাশেঙ্কো আরও বলেন, আমাকে লোকদের রক্ষা করতে হবে, আমি দেশের সুরক্ষার কথা ভাবছিলাম। যাত্রীবাহী বিমানটি নামাতে মিগ-২৯ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি ‘একেবারে মিথ্যা’ বলে তিনি দাবি করেন।
প্রাক্তন সোভিয়েত জাতিকে ১৯৯৪ সাল থেকে শাসন করে আসা লুকাশেঙ্কো আরও বলেন, এটি আর তথ্য যুদ্ধ নয়, এটি আধুনিক হাইব্রিড যুদ্ধ। তবে এটি সত্যিকারের যুদ্ধে পরিণত না হওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই কিছু না কিছু করা উচিত। তিনি বেলারুশের উপর আরোপিত যেকোনো নিষেধাজ্ঞার কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখানোরও প্রতিশ্রুতি দেন।