সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

এসএমএস পেয়েও টিকা পাচ্ছেন না অনেকেই

এসএমএস পেয়েও টিকা পাচ্ছেন না অনেকেই

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। তখন স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষকে হাতে পায়ে ধরেও টিকা নেওয়াতে পারেনি। এখন একই টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিদিন একশ জনকে দেওয়া হচ্ছে। তাও আবার শুধু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত জেনারেল হাসপাতালে। সেই একশ জনের তালিকায় নিজের নামটা লিপিবদ্ধ করতে যথারীতি লবিং করছেন অনেকেই। তাও আবার করোনার দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য এসএমএস প্রাপ্তরা। টিকা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর মহলের সুপারিশে কাহিল অবস্থা।

জানা গেছে, মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় গত রবিবার থেকে করোনার টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে একটি কেন্দ্রে চলছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) স্বাস্থ্য বিভাগও এরই মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে। টিকা প্রাপ্তিসাপেক্ষে পুনরায় টিকাদান কার্যক্রম চালুর কথা জানিয়েছে চসিক কর্মকর্তারা। মহানগরে ফুরিয়ে গেলেও উপজেলা পর্যায়ে এখনো স্বল্পসংখ্যক টিকা (১০ হাজার ডোজের বেশি নয়) মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে আরও কয়েকদিন টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া যাবে।

চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মজুদ থেকে একশ ভায়াল (১ হাজার ডোজ) টিকা পাওয়া গেছে। সেগুলো ইতিমধ্যে এসএমএস প্রাপ্তদের মধ্যে থেকে প্রতিদিন মাত্র একশ জনকে দেওয়া হচ্ছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৫৪ জনকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে নগরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭২ জন এবং উপজেলায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮২ জন। অবশিষ্ট সামান্য পরিমাণ টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ দ্বিতীয় ডোজ এই যাত্রায় পাচ্ছেন না। তাদের অপেক্ষা করতে হবে নতুন টিকা আসার জন্য। চট্টগ্রামে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬০ জন। তাদের মধ্যে নগরের ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৩ জন এবং ২ লাখ ৫০৭ জন উপজেলার বাসিন্দা।

এ দিকে যাদের এসএমএস এসেছে তারাও টিকা পাচ্ছেন না। ফলে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে যে যেভাবে পারে সেভাবে টিকা নিচ্ছেন। অনেকেই একশ জনের তালিকায় নিজের নাম যুক্ত করতে অনেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দ্বারস্থ হচ্ছেন।

ওমান প্রবাসী আব্দুল বারি আমাদের সময়কে বলেন, আমার করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার এসএমএস এসেছে। কিন্তু প্রথম একশ জনের তালিকায় না আসায় ফেরত এসেছি। শুনেছি, অনেকেই লবিং করে তালিকায় নিজের নাম যুক্ত করেছেন। আগামী ২৪ তারিখ আমার ফ্লাইট, এ অবস্থায় কি করব বুঝতে পারছি না।

একই কথা বললেন আরেক টিকা গ্রহীতা নাজমুল করিম। তার দাবি, কর্মকর্তারা তাদের নিজেদের আত্মীয়স্বজনদের তালিকায় যুক্ত করছেন। না হলে আমরা সকাল ছয়টায় এসে একশ জনের তালিকায় নেই কেন?

করোনা টিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, অনেকেই ফোন করে টিকার জন্য। আত্মীয় থেকে শুরু করে অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য ফোন করছেন। বাসায় আসতেছেন। কিন্তু আমরা অসহায়।

চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের হাতে এখনো কিছু টিকা আছে। সেগুলো যাদের প্রথম ডোজ গ্রহণের তিন মাস হয়ে গেছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে। আপাতত টিকার স্টক শেষ। সব মিলিয়ে লাখ খানেক লোক দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাবেন না। পরবর্তীতে টিকা আসলে উনাদের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে হবে। তখন তিন মাস পার হয়ে গেলেও টিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে বাকিদের দেওয়া হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877