স্বদেশ ডেস্ক: হজ মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও বেশ কিছু এজেন্সি এখনো অনেক হজযাত্রীর বাড়িভাড়া, ভিসা প্রসেসিং, পে-অর্ডার ও বিমানের টিকিট সংগ্রহ করেনি। এ ঘটনায় ৪৬ হজ এজেন্সিকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে তলব করে কড়া বার্তা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে ৯ হজ এজেন্সি ওই তলবে সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার মোট ৫৫ এজেন্সিকে এসব বিষয়ে সতর্ক করার জন্য ডাকা হয়েছিল। জানা গেছে, পবিত্র রমজানের আগেই গত ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাড়িভাড়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অথচ হজ মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও ৫৫টি এজেন্সি ঠিকমতো সব হজযাত্রীর বাড়িভাড়া সম্পন্ন করতে পারেনি। সেই সঙ্গে তারা কোনো কোনো হজযাত্রীর ভিসা প্রসেসিং ও বিমান টিকিটও সংগ্রহ করেনি। ফলে তাদের মাধ্যমে হজগমনেচ্ছুকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা কাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক (উপসচিব) মো. সাইফুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘কোনো এজেন্সির গাফলতির কারণে যদি একজন হজযাত্রীও হজে যেতে না পারেন, তা হলে চড়া মাশুল দিতে হবে। তারা যত প্রভাবশালীবই হোক না কেন কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা চাই একজন হজযাত্রীও যেন বাদ না পড়েন।’
৯ এজেন্সি কেন আপনাদের ডাকে সাড়া দেয়নি-এমন প্রশ্নে পরিচালক বলেন, ‘হয়তোবা ওই এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা দেশে নেই। তারা হজযাত্রীদের বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য কাজে সৌদি আরবে অবস্থান করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বিষয়টি নিয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এদিকে হজে অনিয়মের ঘটনায় গত বছর বেশ কয়েকটি এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করা হয়।
প্রতিবছরের মতো এবার যেন কোনো ধরনের অনিয়ম না হয় সে জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সামান্য অনিয়ম হলেও দায়ী এজেন্সিকে ছাড় দেওয়া হবে না-বারবার হজ অফিস থেকে এমন হুশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৫০৮ বাংলাদেশি হজে যাচ্ছেন। আর হজ পরিচালনাকারী এজেন্সির সংখ্যা ৫৯৮টি।
তলবে সাড়া দেয়নি যে ৯ এজেন্সি : খাজা ট্রাভেলস (৮৮২), খাজা এয়ার ওয়েসিস (৮৮৮), মল্লিক ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল (১০৪৭), নাফ এয়ার ইন্টারন্যাশনাল (১০৭১) সাদমান ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস (১১৪২), হান্না ওভারসিস ট্রাভেল এজেন্ট (১৩৫৭), মিম ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল (১৩৭৪), প্রত্যাশা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস (১৩৮২) ও জিলানি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস (১৫১৪)।
যে ৪৬ হজ এজেন্সিকে সতর্ক করা হলো : এমএ ইন্টারন্যাশনাল লি., মোবালিং ট্রাভেলস, মক্কা মোক্কাররম ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, কম্বাইনড ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল লি., এয়ার স্টেশন ইন্টারন্যাশনাল, সার্ক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, ট্রাভেলন এয়ার সার্ভিসেস, আফনান এভিয়েশন, আবতাহি এয়ার ইন্টা. লি., এএইচবি ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল লি., আমাতুন এয়ার ট্রাভেলস সার্ভিসেস, অঞ্জন এয়ার ট্রাভেলস, আল-মারিয়া ট্রাভেলস, আল-মারসুস ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ ডায়মন্ড হজ গ্রুপ, বর্ষা ওভারসিস, ভৈরব ট্রাভেলস, ব্রাইটন এয়ার সার্ভিসেস, ব্রডওয়ে ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এয়ার সার্ভিসেস, ফিউচার ওভারসিস, গালফ ট্রাভেলস, হোসাইন এয়ার সার্ভিসেস, জাবালে নুর ইন্টারন্যাশনাল, কেএসপি ট্রাভেলস, খান জাহান আলী হজ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, এমএস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, মেসার্স মীর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, মার্ভেলাস এয়ার কিং, মেজাব ওয়াল্ড ওয়াইড সার্ভিসেস, ওয়েল ওভারসিস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, রিমি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, এসএম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, স্কাই ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সাউথ ইস্ট ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সাকসেস এয়ার সার্ভিস, সুপার এয়ার সার্ভিসেস প্রাইভেট লি., বেস্ট ফ্লাই ইন্টারন্যাশনাল, ইউনিয়ন টুরিজম সার্ভিসেস, রাব্বানি ওভারসিস এভিয়েশন, শেখ জালাল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, ওহিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, দারুল ইহসান হজ কাফেলা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, রহমানিয়া এয়ার ট্রাভেলস, আল-খিদমা ওভারসিস ও গাজী ট্যুরস ট্রাভেলস।