স্বদেশ ডেস্ক:
পুলিশের সব সাঁজোয়া যান এপিসিকে (আর্মার পার্সনেল ক্যারিয়ার) রণসাজে সাজানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে এপিসি পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং এর যথাযথ ব্যবহারে বাহিনীর সব ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মোদিবিরোধী কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ ও ২৮ মার্চ ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটে। এ সময় কোথাও কোথাও পুলিশের সাঁজোয়া যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলত এরপরই এপিসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহারকালীন সময়ে কীভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে- এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তর বাহিনীর সব ইউনিটপ্রধানদের নির্দেশনা দিয়েছে।
জানা গেছে, নতুন নির্দেশনায় দাঙ্গা দমন ও অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় এপিসি ব্যবহারে বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে সুনির্দিষ্ট টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। টিম গঠনের পর একটি এপিসির জন্য দুজন চালক নিয়োজিত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়, যাদের এপিসি চালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। এপিসি সচল রাখার জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দিকটি তদারকি করতেও দেওয়া হয়েছে তাগিদ।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ডিউটিকালীন কোনো অবস্থাতেই চালক ও তদারকি কর্মকর্তা এপিসিকে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে যাবেন না। এটি একটি বিশেষায়িত যান হওয়ায় এর ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দীর্ঘসময় প্রয়োজন। তা ছাড়া এটি ব্যয়বহুল হওয়ায় এর ব্যবহারে যথাযথ সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে।
সদর দপ্তরের ওই নির্দেশনা পেয়ে পুলিশের সব ইউনিট এপিসির রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা ও ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রশিক্ষিত চালক ও অস্ত্রধারীদের দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্রতিটি এপিসিকে। পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়টি দেখভাল করছেন। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের দাঙ্গা পরিস্থিতিতে যাতে এপিসি যথাযথ ব্যবহার করা যায়- এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশের একাধিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, হেফাজতে ইসলাম নেতাদের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এ বিষয়টি মাথায় রয়েছে পুলিশের। তখন যাতে এপিসি ব্যবহার করে দ্রুত দাঙ্গা দমন করা যায়, সে জন্য প্রতিটি যানকে রণসাজে সজ্জিত করা হচ্ছে।
গত ২৬ মার্চ হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যান, র্যাকার, ২টি পিকআপ ভ্যানসহ আরও বেশকিছু যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনা কীভাবে ঘটল, এক্ষেত্রে বাহিনীর কার কী দায়দায়িত্ব ছিল এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ সদর দপ্তর। এ ছাড়া ভবিষ্যতে কেউ যাতে এপিসি ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে, সেদিক মাথায় রেখেই জেলায় জেলায় পুলিশকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।