স্বদেশ ডেস্ক:
মেট্রোরেলের কোচ নিয়ে জাপানি পতাকাবাহী জাহাজ এসপিএম ব্যাঙ্কক মোংলা বন্দরের জেটিতে পৌঁছেছে। প্রথম চালানে আসা ৬টি রেলওয়ে কার (কোচ) খালাসের কাজ শুরু হয়েছে বুধবার বিকাল থেকেই। কারবাহী জাহাজ কোম্পানি এনসিয়েন্ট স্টিমশিপ কোম্পানি লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি মো. ওহিদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওহিদুজ্জামান জানান, থাই পতাকাবাহী এমভি এসপিএম ব্যাঙ্কক নামে এ জাহাজটি গত ৪ মার্চ রেলওয়ের কার নিয়ে জাপানের কোবে বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দ্যেশে ছেড়ে আসে। প্রথম দফায় এ জাহাজটিতে এসেছে মেট্রোরেল রেলওয়ের ৬টি কার (এক সেট)। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে মেট্রোরেলের বাকি ১৩৮টি রেলওয়ে কারও পৌঁছবে এ বন্দরে। আর রেলওয়ের এ কার পরিবহনে নিযুক্ত হয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক এভারেট এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর জাহাজ থেকে দ্রুত রেলওয়ে কার খালাস কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শ্রমিক নিয়োগকারী স্টিভেডার্স প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স’কে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাকারিয়া জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব হবে। প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পরবর্তীতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে চালুর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আর রেলওয়ে কার তৈরির জন্য ২০১৭ সালের আগস্টে কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। চুক্তি অনুয়ায়ী, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে জাপানের কাওয়াসাকি হ্যাভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড রেলওয়ের কার নির্মাণ কাজ শুরু করে।
মেসার্স খুলনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জাহিদ হোসেন জানান, কারবাহী জাহাজটি মোংলাবন্দরের জেটিতে ভিড়েছে এবং খালাস প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। দুই শিফটে প্রায় ১৬ ঘণ্টায় পুরো খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
অপরদিকে দ্রুত কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও ফরোয়াডিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে নিযুক্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স এলিট ট্রেডিং। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের খুলনা শাখার ব্যবস্থাপক কাজী বেদারুল আলম জানান, বিদেশি জাহাজ থেকে কারগুলো নির্ধারিত বার্জে নামানো হবে। আর খালাস প্রক্রিয়া নির্বিঘœ করতে জাপান ও মালয়েশিয়াসহ দেশীয় টেকনিশিয়ানদের একটি দল তদারকি করবেন। এ ছাড়া জাপানের কাওয়াসাকি হ্যাভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন বন্দর জেটিতে। খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে কাস্টমস শুল্কসংক্রান্ত ক্লিয়ারিং ও ফরোয়াডিংসহ আউট পাসসহ যাবতীয় কার্যক্রমে প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে।
মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা জানান, মোংলাবন্দরের মাধ্যমে মেট্রোরেলের প্রথম চালান আসা ও খালাস হওয়ার বিষয়টি মাইলফলক হয়ে থাকবে। মেট্রোরেলের কার খালাস প্রক্রিয়া নির্বিঘœ করতে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি আরও জানান, এ বন্দরের উন্নয়ন অগ্রগতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ উন্নয়নমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভারি যন্ত্রপাতি এখানেই খালাস হচ্ছে। এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে বলেও জানান তিনি।