বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ছয় মামলায় ২২৫০ জন আসামির সবাই অজ্ঞাত

ছয় মামলায় ২২৫০ জন আসামির সবাই অজ্ঞাত

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরবিরোধী বিক্ষোভের জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানা কার্যালয়ে হামলা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস এবং ডাকবাংলোয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় পৃথক ছয়টি মামলা হয়েছে। ঘটনার তিনদিন পর গত ২৯ মার্চ রাতে হাটহাজারী মডেল থানায় এসব মামলা রুজু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি জানা যায় গতকাল বুধবার। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২৫০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে।

থানায় করা ছয়টি মামলার মধ্যে চারটির বাদী পুলিশ। অন্য দুটি মামলা রুজু করেছেন ওই ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আকতার কামাল চৌধুরী। অন্যটির বাদী সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাটহাজারী কার্যালয়ের নাজির একরামুল হক শিকদার। এ দুই মামলায় ২০০-২৫০ জনকে আসামি (অজ্ঞাত) করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ভূমি অফিসে হামলার ঘটনায় মামলা হলেও এখনো ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। ব্যাপক ক্ষতির কারণে তা নিরূপণে সময় লাগছে। নথিপত্র, খতিয়ান, বালাম বহি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না যে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে ওই দিনের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় হামলার অভিযোগে করা একটি মামলায় প্রায় ২০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলোর আসামিদের সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। কারণ এ বিষয়ে তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করছে থানাপুলিশের কর্তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মামলার বিষয়ে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আপনাদের জানাব। এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যদিকে গতকাল সকালে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক বলেন, হাটহাজারীর ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাগুলো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হবে।

প্রসঙ্গত নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে হাটহাজারীতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা থানায় হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এ সময় হাটহাজারীতে এক দর্জি ও তিন মাদ্রাসাছাত্রসহ চারজন নিহত এবং মাদ্রাসার ছাত্র, পুলিশ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ অর্ধশতাধিক আহত ও গুলিবিদ্ধ হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, চারজন নিহত হওয়ার জেরে মাদ্রাসাছাত্ররা হাটহাজারী থানা, ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হামলা চালান। তারা হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের ওপর দেয়াল তৈরি করে রাখে প্রায় ৫৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

থানায় হামলা, ভূমি অফিস ও ডাকবাংলোয় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রসঙ্গে হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা ইয়াহ্ইয়া আলমপুরী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা জানি না। এ ঘটনায় আমাদের মাদ্রাসার ছাত্ররা জড়িত নয়; বরং মাদ্রাসাছাত্রদের অহেতুক গুলি করে শহীদ করা হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্রদের আহত-নিহত হওয়ার ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা বা অভিযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মাদ্রাসায় বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। এখনো পর্যন্ত মামলা বা অভিযোগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877