স্বদেশ ডেস্ক:
মাথাব্যথার কথা বলে বাসায় ডেকে চিকিৎসকে ফাঁদে ফেলে ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ফাঁকা কাবিননামার বিবাহ রেজিস্টারে স্বাক্ষর করিয়ে পরবর্তীতে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন পাপিয়া সুলতানা পলি (৩০) নামের এক নারী। এ ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে মাহবুব আলম নামে ভুক্তভোগী চিকিৎসক নগরীর চন্দ্রিমা থানায় ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ পলিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব আলম চন্দ্রিমা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি রাজশাহীর বেসরকারি বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। পড়াশোনার সময় পলির সঙ্গে যোগাযোগ হয় পাশের ভাড়াটিয়া সূত্রে। সেই সুবাদে বছরতিনেক আগে তার মেয়েকে (১৭) ইংরেজি পড়াতেন মাহবুব। এ সময় তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাহবুব ওই নারীকে বড় বোন হিসেবেই দেখতেন।
এর সূত্র ধরে মাঝেমধ্যে ফোনে চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শ নিতেন অভিযুক্ত পলি। ঘটনার দিন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে পলি ফোন করে মাহবুবকে জানান- তার মাথা প্রচুর ব্যথা করছে। তাই বাইরে বের হয়ে ওষুধ কেনা তার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য মাহবুবকে ওষুধ নিয়ে তার বাসায় যেতে বলেন তিনি।
পলির কথামতো মাহবুব ওষুধ ও ডাব কিনে নিয়ে তার বাসায় আসেন। এর কিছুক্ষণ পর অজ্ঞতপরিচয় ৫ থেকে ৬ যুবক রুমের ভেতরে প্রবেশ করে তাকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে পলির লোকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা মৃত্যুর ভয় দেখায় তাকে। এ ছাড়া ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পসহ কথিত কাজী একটি ফাঁকা কাবিননামায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
ভুক্তভোগী মাহবুব আলম বলেন, ‘একই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকার সুবাদে প্রায় তিন বছর আগে পলির মেয়েকে ইংরেজি পড়াতাম। কিন্তু বেশ কিছুদিন আমাদের পড়ালেখা শেষ হওয়ায় আমি অন্যত্র বাসা ভাড়া নিই। তার সঙ্গে তেমন যোগাযোগও ছিল না। তবে যখন পড়ালেখা করতাম, তখন তাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে আমাকেই বলতেন। আমি ডাক্তার দেখিয়ে দিতাম; কিন্তু বর্তমানে তার কিংবা তার পরিবারের সঙ্গে আমার তেমন যোগাযোগ ছিল না। হঠাৎ ওই দিন অসুস্থতার কথা বলে ব্লাকমেইল করতে পলি তার বাসায় ডাকেন আমাকে।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মনির বলেন, প্রথমে মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নারীকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী চিকিৎসক মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত নারীর সহযোগীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।