স্বদেশ ডেস্ক: শফিকুল ইসলাম (২৭) সুনামগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে এসে আবাসিক হোটেলে ওঠেন। এর পর সুযোগ বুঝে মানুষের বাসায় চুরি করে সেই টাকা থেকে হোটেলের বিল পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট টাকা নিয়ে চলে যান বাড়িতে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের ভাই আহমেদ ইকবাল হায়দারের বাড়ি চুরির পর তিনি গ্রেপ্তার হন পুলিশের হাতে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর লাভলেনে অবস্থিত নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দারের বাড়িতে চুরি করেন শফিকুল ইসলাম। আহমেদ ইকবাল হায়দার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসের ভাই। সেখান থেকে দুটি আইফোন চুরি করেন শফিকুল। ওই বাসায় চুরি করতে গিয়ে তিনি সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। এর পর একটি সিগারেটও ধরান। কিন্তু সিগারেটের আগুনে তার গায়ের কাপড় পুড়ে যায়। তাতেও কোনো সমস্যা হয়নি শফিকের। নিরাপদে বের হয়ে যান। পরে ফোন দুটি তিনি ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ফোন দুটি উদ্ধার করা হয়েছে, আনোয়ার হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশের একটি বাসায়ও চুরি করেন শফিকুল ইসলাম। শফিকুল পুলিশকে বলেন, তিনি সিঁড়ি দিয়ে সোজা ওই বাসায় ওঠেন। দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখেন ঘরে কেউ নেই। পরে ওই বাসা থেকে তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ চুরি করেন। এর পর তিনি বাসা থেকে বের না হয়ে সারাঘর ঘুরতে ঘুরতে এক সময় কিচেনে যান। সেখানে ভাত ও কোয়েল পাখির মাংস রান্না করা দেখতে পান। তখন বাসায় বসে ওই মাংস দিয়ে ভাত খান। তারপর বেরিয়ে যান।
কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ওই বাড়িতে আরও স্বর্ণালঙ্কার ছিল। কিন্তু শফিক এগুলো স্বর্ণ কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। ফলে নিশ্চিত হয়ে কেবল
তিন ভরি স্বর্ণ নিয়ে বের হয়ে যান। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই বাড়িতে হীরার অলঙ্কারও ছিল। কিন্তু শফিক সেগুলো চিনতে না পারায় এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেন। শফিক পুলিশকে বলেন, দাঁতে কামড়ে যেগুলো নরম মনে হয়েছে, কেবল সেগুলোই স্বর্ণ ভেবে নিয়েছেন, অন্যগুলো ভেবেছেন ইমিটেশনের অলঙ্কার। আর হীরার অলঙ্কারকে মনে করেছেন হাটবাজার থেকে কেনা সাধারণ পণ্য। এর বাইরে শফিকুল কয়েকমাস আগে কর্নেল হাট এলাকায় একটি কসমেটিকসের দোকানে চুরি করেন।
শফিকুলের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার কামরাবন এলাকায়। বাবা আখতার হোসেন কৃষক। শফিক দাবি করেন, দুবছর আগে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটে শুঁটকি নিয়ে ব্যবসা করে লোকসানে পড়েন। এর পর থেকে চট্টগ্রামে এসে নিয়মিত চুরি করেন। এর মধ্যে একবার ইয়াবা নিয়েও কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
নিজেকে নিরক্ষর দাবি করা শফিকুল বলেন, রাজমিস্ত্রি কাজ করতে গিয়ে আবুল খায়ের নামের এক লোক তাকে চুরির কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। জীবনে প্রথমবার ১১টি লাউ চুরি করে প্রতিটি ৪০ টাকা করে বিক্রি করেন। এর পর বাবার পকেট থেকে ৫ হাজার টাকা চুরি করেন।