স্বদেশ ডেস্ক:
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা জামায়াত নেতা মাওলানা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় চার্জগঠন করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার এক নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা এ চার্জগঠনের আদেশ দেন। পুরান ঢাকার বকশীবাজারস্থ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে এদিন এ মামলায় চার্জগঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আসামী সাঈদীর পক্ষে আইনজীবীরা মামলায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করেন। যা আদালত নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা সাঈদীকে বিচারক অভিযোগ পাঠ করে তিনি দোষী না নির্দোষ জিজ্ঞাসা করলে তিনি নির্দোষ দাবি করায় আদালত আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত বোর্ডের অর্থ আত্মসাতের এ মামলায় দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ছয়জন আসামি। অপর পাঁচ আসামি হলেন-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি এডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক। আসামিদের মধ্যে সাঈদী কারাগারে এবং আবুল কালাম আজাদ পলাতক রয়েছেন। অপর চার আসামি জামিনে রয়েছেন।
ইফার যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত বোর্ডের ১ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২০০৪-০৫ অর্থ বছরের ১৩ লাখ টাকাসহ যাকাত তহবিলের মোট ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার দেশের ৬৪ জেলায় গরিব ও দুস্থদের না দিয়ে নিজেদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ করে আত্মসাত করেন। উক্ত অর্থের মধ্যে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাহজাহান জাতীয় বন্ধুজন পরিষদ ভোলার অনুকুলে ৫০ লাখ, কাঠালিয়া মুসলিম এ.কে. ইনষ্টিটিউটের অনুকুলে ৬ লাখ ৫০ হাজার, মাওলানা আবুল কালাম আযাদের মসজিদ কাউন্সিল ফর কামউনিটি এডভান্সমেন্টের অনুকুলে ৪৫ লাখ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তৎকালীন সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্র পিরোজপুরের অনুকুলে ৫ লাখ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুতফুল হকের দারুল কারার সোসাইটি, শরিয়তপুরের অনুকুলে ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।