স্বদেশ ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি দ্রুত ও হয়রানিমুক্ত করতে অনলাইন পদ্ধতিতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন আমাদের সময়কে এ তথ্য জানান। সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া জটিল। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে বদলি নিয়ে হিমশিম খেতে হয় প্রাথমিকের প্রশাসনকে। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে উপজেলা কার্যালয় পর্যন্ত শিক্ষকরা ধরনা দেন পছন্দের প্রতিষ্ঠানে বদলি নিতে।
এ নিয়ে হয়রানি, অনিয়ম আর দুর্নীতি চলে দপ্তরগুলোয়। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সরাসরি অনলাইনে আবেদন জমা নেওয়া হবে। অনলাইনে বিশেষ সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলির আদেশ তৈরি হবে। বদলিপ্রত্যাশীরা অনলাইনেই তাদের আবেদনের স্ট্যাটাস জানতে পারবেন। এ প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষকদের বদলিতে হয়রানি, অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ হবে বলে মনে করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ প্রসঙ্গে আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষকরা একটি পদের বিপরীতে একাধিক আবেদন করতে পারবেন। তাদের জ্যেষ্ঠতা, যোগ্যতা, কর্মজীবনের অর্জন ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী বদলি করা হবে। বদলির জন্য শিক্ষকদের পদ শূন্য থাকাসাপেক্ষে একাধিক বিদ্যালয়ে চয়েস দেওয়া হতে পারে। আবেদনকারীর আবেদন কোন পর্যায়ে রয়েছে, নিজস্ব আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে তা দেখতে পারবেন। একাধিক বিদ্যালয়ে আবেদন করলেও যোগ্যতার ভিত্তিতে শূন্য থাকাসাপেক্ষে আবেদনকারীকে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার ভাবনা এসেছে। এ জন্য একটি আধুনিক সফটওয়্যার তৈরি করা হবে। পুরো বদলি প্রক্রিয়া অনলাইনভিত্তিক হবে। এতে ঘরে বসেই শিক্ষকরা আবেদন জমা দিতে পারবেন।
ঢাকায় এসে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। যোগ্যতা অনুযায়ী বদলির আদেশ জারি করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিবছর তিন মাসজুড়ে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম চলে। জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হয়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত বদলির জন্য আদেশ জারি করা হয়। পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, মেট্রোপলিটন শহরে বদলি খুবই জটিল। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা দপ্তরগুলোর কাছে জিম্মি থাকেন শিক্ষকরা।
গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছিল চলতি বছরে বদলির সুযোগ। বদলির জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত শিক্ষক ভিড় করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। তদবিরে দালালদের দৌরাত্ম্যও কম ছিল না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েকদিন অধিদপ্তরের প্রবেশপথ বন্ধ রাখতে হয় কর্তৃপক্ষকে।