ডা. অভিষেক ভট্টাচার্য: আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস ও আধুনিক জীবনযাপনের ফলে ইদানীং মলাশয় ও বৃহদন্ত্রে ক্যান্সারের প্রকোপ বেশ প্রকট আকার ধারণ করেছে। খুব সাধারণ কিছু উপসর্গের মাধ্যমে এ ক্যান্সার তিলে তিলে আত্মপ্রকাশ করে। চিকিৎসাবিদ্যার বইগুলো বলছে, উপসর্গ দেখা দেওয়ার কমপক্ষে ১২-১৮ মাস আগেই শরীরে মলাশয়ের ক্যান্সারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেসব উপসর্গ কখনও অবহেলা করবেন না হঠাৎ মলত্যাগের অভ্যাসের (ইড়বিষ যধনরঃ) পরিবর্তন যেমনÑঘন ঘন পায়খানা হওয়া বা পায়খানা হওয়ার পরও এর বেগ রয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
* ঘন ঘন ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া একের পর এক সংঘটিত হওয়া।
* মলদ্বার দিয়ে তাজা রক্ত বা জমাটবাঁধা রক্ত পড়া।
* পায়খানা স্বাভাবিক আকারের চেয়ে সরু বা পাতলা হওয়া।
* ঘন ঘন পেটের অস্বস্তিতে ভুগতে থাকা। এ ছাড়া ঘন ঘন পেট কামড়ানো, পেটভর্তি গ্যাস থাকা ইত্যাদি উপসর্গ।
* কানো জ্ঞাত কারণ ব্যতিরেকে হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া।
* সারাক্ষণ শরীর দুর্বল লাগা।
* হঠাৎ শরীরে জ্ঞাত কারণ
* বহির্ভূত রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া।
এসব উপসর্গ দেখা দিলে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিতে নয় বরং একজন সার্জারি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। উপসর্গ ব্যতিরেকেও যারা সর্বক্ষণ চেকআপে থাকবেন। যাদের পূর্ববর্তী কোনো কোলোনস্কপিতে পলিপ ধরা পড়েছে। যাদের পরিবারে এক বা একাধিক বৃহদন্ত্র ও মলাশয় (কোলরেক্টাল) ক্যান্সারের রোগী আছে/ছিলেন। যাদের বাবা-মা, চাচা-মামা, ফুফু-খালার এ ধরনের ক্যান্সার বা পলিপ ছিল বা আছে তাদের ক্ষেত্রে চেকআপ করানো অত্যন্ত জরুরি। যাদের ইনফ্লামেটারি বাওয়েল ডিজিজ (ওইউ) বা অন্ত্রে দীর্ঘদিনের প্রদাহ আছে। পারিবারিক ক্যান্সার উপসর্গ (ঋধসরষধৎ পধহপবৎ ংুহফৎড়সব), এর আওতাধীন যেকোনো ক্যান্সার যদি পরিবারের কারও হয়ে থাকে।
এসব ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ইতিহাস যাদের আছে তাদের অতিসত্বর সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেননা ক্যান্সারের প্রক্রিয়া উপসর্গ শুরু হওয়ার বহু আগেই শরীরে শুরু হয়ে যায়, যা শুধু দ্রুত প্রকৃত চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় সম্ভব।