শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন

মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাস কলঙ্কিত, তাদের ইনডেক্সে কি লেখা হবে?

মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাস কলঙ্কিত, তাদের ইনডেক্সে কি লেখা হবে?

স্বদেশ ডেস্ক: সুকান্তের একটি কবিতার লাইন, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়। এরপরে যাই লেখা হোক না কেন? এটুকুই থাক। সত্যিই পৃথিবী অবাক বিষ্ময়ে দেখছে কি ঘটতে চলেছে গণতন্ত্র ও আইনের সূতিকাগার মার্কিন মুল্লুকে। দুনিয়ার এ প্রান্তে যখন রাতের নীরবতা কাটছে। ওঠছে ভোরের আলো। ঠিক তখন অন্যপ্রান্তে গণতন্ত্রের স্তম্ভে চলছে দুর্বৃত্তদের কালো আঘাত।

ট্রাম্প প্রথম থেকেই এবারের নির্বাচনকে নানাভাবে বিতর্কিত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তার দল রিপাবলিকান পার্টির সকল নেতারা যখন একে একে গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছেন, অভিনন্দিত করছেন বাইডেনকে তখনও তিনি ভেংচি কাটছেন।

কোর্টে ছুটছেন। মানবেন না বলে হুমকি দিয়ে চলেছেন।

ট্রাম্প তার পরাজয়কে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না এটা বিশ্বের তাবৎ মানুষই দেখছিল। তবু মার্কিন গণতন্ত্র বলে কথা। শত শত বছরের ইতিহাস। সারা পৃথিবীর গণতন্ত্র মূল্যায়ণ করে যে দেশ। দেশে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা দূতিয়ালি করেন, চাপ অব্যাহত রাখেন। বিশ্বব্যাপী ফি বছর ইনডেক্স তৈরি করে জানান দেন, কোন দেশের কি অবস্থা? স্টেট ডিপার্টমেন্টের সেই প্রতিবেদন গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় সর্বত্র। সেই প্রতিবেদনের ওপর বদল হয় অনেক কিছুর। অথচ কি ঘটলো সেই ঐতিহ্যবাহী গণতন্ত্রের ধারক ইউএস ক্যাপিটল হিলে। কি লেখা হবে তাদের ইনডেক্সে? প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অফিসিয়ালি ঘোষণার দিন চলল দিনভর তান্ডব। ওয়াশিংটনে কারফিউ জারি। বিক্ষোভ, ভাঙচুর, গ্রেপ্তার আর চারজন নিহতের ঘটনায় দুনিয়া থমকে গেছে। বিশ্ব নেতারাও নিন্দা জানিয়েছেন এ ঘটনার।

যে ঘটনা ২০৬ বছর রেকর্ড তছনছ করে দিয়েছে। ১৮১২ সালের জুনে বৃটিশরা হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে। বৃটিশ ও তার মিত্রদের পরিচালিত এ যুদ্ধ ‘ওয়ার অব ১৮১২’ নামে পরিচিত। যা শেষ হয়েছিল ১৮১৫ সালে। এর ঠিক ২০৬ বছর পর ট্রাম্প সমর্থকরা তছনছ করে দিল পার্লামেন্ট ভবন। সেই হামলার সঙ্গে এর তফাত হচ্ছে, এবার ঘরের শত্রু বিভীষণ হলেন। হোয়াইট হাউজের ক্ষমতার অলিন্দ থেকে বের না হতে সমর্থকদের মাঠে নামালেন। অথচ যেই মাহেন্দ্রক্ষণে ক্যাপিটল হিল ভবনে সকলে মিলিত হয়েছিলেন বাইডেনের জয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের জন্য।


সহিংসতা শেষে পুনরায় যখন সিনেট অধিবেশন শুরু হয় তখন খোদ মার্কিন আইনপ্রণেতারা দিনটিকে তাদের ইতিহাসে কালোদিন বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, যুক্তরাষ্টের ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি কালোদিন হিসাবে উল্লেখ থাকবে। তিনি অধিবেশনের শুরুতে আরও বলেছেন, সহিংসতা কখনও বিজয়ী হয় না। স্বাধীনতা বিজয়ী হয়। এটা এখনও জনগণের হাউজ।

রিপাবলিকান দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, তারা আমাদের গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করতে চেয়েছিল, তারা পারেনি, তারা পরাজিত হয়েছে।

ডেমোক্রেট সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, ৬ই জানুয়ারিকে এখন আমরা আমেরিকার ইতিহাসের সেই অল্প কয়েকটি তারিখের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি যেগুলো কুখ্যাত হয়ে থাকবে।

যেখানে রিপাবলিকান নেতারাই জনরায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সেখানে ট্রাম্প এ কি করলেন! ট্রাম্প হাঁটলেন উল্টো পথে। তিনি মার্কিন গণতন্ত্রকে কালো দিয়ে ঢেকে দিলেন। সুদীর্ঘ মার্কিন ইতিহাসকে গণতন্ত্রহীনতার পথে হাঁটতে পেরেক ঠুকে দিলেন।

তবে সব ছাপিয়ে এটাই হয়তো সত্য মার্কিন রাজনীতিকরা শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের পক্ষেই। আর তার প্রমাণও রেখে চলেছেন। একে একে ট্রাম্পকে ছাড়ছেন সকলেই। প্রস্তাব করা হয়েছে, ট্রাম্পকে অভিসংশনের। এখন দেখার বিষয় কোথাকার জল কোথায় গড়ায়? আরও কি কি রেকর্ড অপেক্ষা করছে? মার্কিন গণতন্ত্র শিরদাঁড়া খাড়া করতে কি কি পদক্ষেপ নেয় দুনিয়ার দৃষ্টি নিবন্ধ সেখানটাতেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877