শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ অগ্রগতি টেকসই করবে

দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ অগ্রগতি টেকসই করবে

করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর জীবন ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। সেবার ব্যবসায় ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ২১টি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয় এবং তাতে আর্থিক সংশ্লেষ ছিল প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার। মানতেই হবে, সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপে তখনকার মতো অর্থনীতি আসন্ন সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। আজ বাংলাদেশ গর্ব করে বলতে পারে করোনা মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে গতিতে এগিয়ে চলেছে তা সত্যিই চমকপ্রদ। বিভিন্ন জরিপের সূচকে দেখা যাচ্ছে, করোনার ব্যবস্থাপনা ও জনসুরক্ষায় বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অধিকাংশ ধনী দেশের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বাগ্রে, আর প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে আমাদের দেশ।

বর্তমানে বিশ্বে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে এবং বলা প্রয়োজন ধনী দেশগুলো আবারও চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখের কাছাকাছি, আর পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোয় সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়তির দিকে রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে সংক্রমণ ৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং মৃত্যু ১৭৬৪৫৮৪। বাংলাদেশ এবারও গর্ব করে বলতে পারে যে, এখানে বস্তুত করোনার আলাদা কোনো দ্বিতীয় ঢেউ আসেনি। প্রথম ঢেউয়েরই ধারাবাহিকতা চলছে এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তবে এ মুহূর্তে আমরা বলব না যে, দেশ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। বিপদ কাটেনি এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অব্যাহত রাখতে হবে। জীবন রক্ষার পাশাপাশি এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থনীতির চলমান চাকা ও উন্নয়নের রথ এগিয়ে নেওয়া। এই প্রেক্ষাপটে সরকার পুনরায় দশ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলে এ টাকা ব্যবসায় ও শিল্প খাতে ঋণ হিসেবে বরাদ্দ দেবে। সুদের হার ১৪ শতাংশ হলেও গ্রাহককে দিতে হবে ৯ শতাংশ হারে, বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে। দুই বছর মেয়াদি এই ঋণ একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতে পারবে। এ ছাড়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য আরও কিছু কড়া বিধিবিধান থাকছে।

আমরা জানি করোনার কারণে সরকারকে স্বাস্থ্য খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়েছে। সামনে টিকার জন্যও লাগবে বড় অঙ্কের টাকা। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির দ্বিতীয় খাত কৃষি সচল রাখার জন্যও সরকারকে পাশে থাকতে হচ্ছে। এই সূত্রে আমরা বলব, শিক্ষার বিষয়টিও উপেক্ষা করা যাবে না। আন্তর্জাতিকভাবেই বলা হচ্ছে করোনাকালে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে শিক্ষা। এ খাত সরাসরি সরকারকে লাভ দেয় না, কিন্তু সরকারের এ বিনিয়োগ জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান বাস্তবতায় বহু বেসরকারি স্কুল অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। পত্রিকার খবরে প্রকাশ, সারাদেশে এই সময়ে আনুমানিক আড়াই হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষক বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে জাতির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সরকারকে শিক্ষা খাতে, বিশেষত শিক্ষকদের বাঁচানোর জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানাব। শেষ কথা হলো ঋণ বিতরণ এবং পরিশোধ নিয়ে যেন কোনো দুর্নীতি না হয় তা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিত করতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877