স্বদেশ ডেস্ক:
সিলেট বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত যুবক রায়হান আহমদের মৃত্যুর আজ ১৮ দিন। এখনো খোলেনি রহস্যজট। জানা যায়নি কোন কারণে ফাঁড়িতে নির্যাতন চালিয়ে ওই যুবককে হত্যা করা হলো। একই সঙ্গে মূল অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পিবিআই। তবে ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছে নিহতের পরিবার।
ঘটনার এতদিন পরও দুই পুলিশ সদস্যসহ গ্রেপ্তার হয়েছে কেবল তিন আসামি। মূলহোতা এসআই আকবর হোসেনও লাপাত্তা। পুলিশ অবশ্য বলছে, তাকে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিগগিরই সুখবর পাওয়া যাবে। তবে আকবর ছাড়া অভিযুক্ত অন্য পুলিশ সদস্য অর্থাৎ এএসআই আশেক এলাহি, কুতুবউদ্দিন, তৌহিদ মিয়া ও সজিব পুলিশ লাইন্সে বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন। যে কোনো সময়ে তাদেরও গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
মহানগর পুলিশের কাছ থেকে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ে হস্তান্তর হলে সুষ্ঠু তদন্তের ব্যাপারে আশ্বস্ত হয় নিহত রায়হানের পরিবার। পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তারাও নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিশেষ এই বাহিনীটি দায়িত্ব পাওয়ার পরই নিহতের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করে। তা ছাড়া ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফাঁড়ির ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও গায়েব, তথ্য গোপন করাসহ এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিনকেও। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের নবাগত পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ সিলেটে এসেই রাত ৮টায় রায়হানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি ন্যায়বিচারের পাশাপাশি অপরাধীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারেও তাদের আশ্বস্ত করেন। নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ একজন চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে
চাকরি করতেন রায়হান। স্ত্রী ও তিন মাস বয়সী মেয়ে আলফাকে নিয়ে থাকতেন আখালিয়ার নেহারিপাড়ায়। এর মধ্যে গত ১১ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে রায়হানকে কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পরদিন হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। যদিও আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। এর পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি ঘটনা তদন্ত করে ওই ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহারের আদেশ দেয়।