স্বদেশ ডেস্ক:
ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে একই সংগঠনের ২২ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর এটি সরকার করাচ্ছে বলে দাবি করেছেন ডাকসু ভিপি নুর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ দাবি করে তিনি বলেন, তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার বিষয়টি সরকারই করাচ্ছে।
নুর বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এটা আসলে সরকারই করাচ্ছে। সরকারি দলের পৃষ্ঠপোষকতায় এরা আসলে এই কাজগুলো করছে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গঠিত হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তখন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন নুরুল হক নুর। তিনিসহ রাশেদকে অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার ব্যাপারে এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘প্রেস ক্লাবে যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা আমাদের সংগঠনের কেউ না। আমরা লাইভে দেখেছি যে ওখানে যারা আছে তাদের একজন “চাকরির বয়সসীমা ৩৫”র আন্দোলনকারী, ঐক্যবদ্ধ সাধারণ ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক। কয়েকজনকে আমরা চিনিও না। ওখানে এ পি এম সুহেল ছাত্র অধিকার পরিষদে ছিল। কিন্তু গত মে মাসে তাকে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে যুক্ত থাকার কারণে বহিস্কার করা হয়েছে। কাজেই তারা সংগঠনের কেউ না।’
নুর বলেন, ‘আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছিলাম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ হিসেবে। সেই আন্দোলনের পরে যেহেতু আমরা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দিকে যাচ্ছি সেখানে আমরা নামটি সংশোধন করে আমরা “বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ” করেছি। এখন আগের নাম নিয়ে কেউ যদি দাবি করে সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় না। তারপরও একজন সংগঠন করতেই পারে। এ নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এটা আসলে সরকারই করাচ্ছে। সরকারি দলের পৃষ্ঠপোষকতায় এরা আসলে এই কাজগুলো করছে।’
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে নুর ও রাশেদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পর ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে বলা হয়, তাদের আর্থিক অস্বচ্ছতা, নারী কেলেঙ্কারি, সংগঠনের অভ্যন্তরীণ স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত, নীতিনৈতিকতাহীন আচরণ, তৃণমূলকে অবমূল্যায়ন, ত্যাগী ও পুরাতন নেতাদের সাময়িক বহিস্কার করাসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে কথা বলার জন্য আমরা উপস্থিত হয়ে বুকভরা দুঃখ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ভয় থাকা সত্ত্বেও। এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ফোন কল, ম্যাসেজের মাধ্যমে নানাবিধ হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও করা হয়েছে। এটা অনেকটা সরকারের বিরোধী মতকে দমিয়ে রাখার যে প্রবণতা তারই অন্য রূপ। এরা নিজেরাই অনলাইন নীতিমালা করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের এক প্রকার মানসিকভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে দিনরাত। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে মিলেমিশে কাঁধে কাঁধ রেখে একসঙ্গে পথ চলা, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে ভালো। কিন্তু সে আদর্শ থেকে তারা আজ যোজন যোজন দূরত্বে সরে গেছে। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্লোগান নিয়ে আমরা আমাদের সাংগঠনিক যাত্রা শুরু করেছিলাম। সেই সংগঠনে নিজেরাই বারবার যারা রাজনীতির নামে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে চায় তাদের মাধ্যমে অন্যায়ের শিকার হচ্ছি। গুটিকয়েক নেতার অহমিকা, অহঙ্কার, একরোখা সিদ্ধান্তের কারণে সাংগঠনিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে আমাদের হাজারো মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে গড়ে ওঠা সংগঠন। এরই ফলশ্রুতিতে একে একে বিভিন্ন কেলেঙ্কারি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে যা খুবই লজ্জাস্কর এবং দুঃখজনক।