বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ১২:০২ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ লাগামহীন সংক্রমণ ঝুঁকিতে

বাংলাদেশ লাগামহীন সংক্রমণ ঝুঁকিতে

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে একদিকে চলছে বর্ষা, আছে ডেঙ্গুর ভয়। এখনো সংক্রমণের চরম অবস্থা দেখা না গেলেও এমন পরিস্থিতিতে গোটা বাংলাদেশে করোনা লাগামহীনভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে চিকিৎসাবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট। অস্ট্রেলিয়ার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখিকা সোফি কাজিন্সের লেখা এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত কোভিড পরীক্ষা না হওয়া, ফি নির্ধারণ ও নজরদারিতে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতি চারজনে প্রায় একজন দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার মানুষ করোনা পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় করোনা পরীক্ষার ফি নেওয়া হচ্ছে ৩৫০০ টাকা। অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষায় ফি নির্ধারণ করায় মানুষের মধ্যে আগ্রহ কমে গেছে। দেখা গেছে, ফি নির্ধারণের পর পরীক্ষার হার কমে দৈনিক এক হাজার মানুষে ০.৮ জনে দাঁড়িয়েছে। চলতি আগস্টে প্রতি এক হাজার মানুষে ০.৬ হারে পরীক্ষা হয়েছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমিনেন্সের প্রধান শামীম তালুকদার ল্যানসেটকে বলেন, ‘করোনা মহামারী বাংলাদেশের অনৈতিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আসল রূপ উন্মোচন করেছে।

একদম শুরু থেকেই সরকার কোভিড পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। শুরুতে বেসরকারি খাতকে পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়নি। এখন আবার পরীক্ষার জন্য ফি নেওয়া হচ্ছে। এতে দরিদ্ররা পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ছেন।’

শামীম তালুকদার জানান, তিনি ঢাকার কয়েকটি কবরস্থান ঘুরে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কবরস্থান পরিচালনাকারীরা তাকে বলেছেন, দেশে সরকারি হিসাবের চেয়ে করোনায় চারগুণ বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন, কিন্তু করোনা পরীক্ষা হয়নি।

করোনা পরীক্ষায় সরকারের ফি নির্ধারণের সমালোচনা করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘মানুষের থেকে টাকা নেওয়া সত্যি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে গরিবদের জন্য টেস্ট করানো এখন কষ্টকর। এমনিতেই মহামারীর সময়ে মানুষের কাজ নেই, টাকা নেই। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের টাকা নেওয়া উচিত হচ্ছে না।’

ঢাকার আরেক চিকিৎসক ল্যানসেটকে বলেন, ১৬৫ মিলিয়ন মানুষের দেশে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টেস্ট হচ্ছে, এটি কিছুই না। এ মহামারী আরও অনেক দিন থাকবে। আমি ভয় পাচ্ছি শীত এলে কী হবে। মানুষও এ নিয়ে আতঙ্কিত।

শামীম তালুকদার বলেন, ‘সরকারের নজর এখন অর্থনীতি বাঁচানোর দিকে। কিন্তু কোভিড-১৯ যখন গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়বে, তখন আরও বেশি মানুষ মারা যাবে।’

গোটা বিষয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কেউ কথা বলতে রাজি হননি বলেও প্রতিবেদনে জানান সোফি কাজিন্স।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877