বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
নেইমারদের কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন

নেইমারদের কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন

স্পোর্টস ডেস্ক:

প্যারিসে নয়। উৎসবের রঙে রাঙা হলো মিউনিখ।  করোনাকালে বিশ্বকাপের আমেজে ফিরেছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশে ফাইনাল। পুরো বিশ্বের ফুটবল রোমান্টিকরা চেয়ে ছিল চাতক পাখির মত। ফাইনাল যেমন হয়ে থাকে। ঠিক তেমনই হয়েছে। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের শৈল্পিক ফুটবলের বৃত্ত ভেঙে জার্মান যন্ত্রের জয় হয়েছে।

রোববার রাতে লিসবনে কিংসলে কোম্যানের গোলে ১-০ তে জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ৬ষ্ঠবারের মত মিউনিখ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার কৃতিত্ব দেখালো। এই ম্যাচে কোম্যানের মত গোলরক্ষক নয়্যারকে বড় করে ধন্যবাদ দিতে হবে।
দ্বিতীয়ার্ধে রঙ পাল্টে যায় খেলার। দুদল আগ্রাসি হয়ে আক্রমণ শুরু করে। খেলোয়াড়রা মেজাজও হারান। নেইমারের আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে যাওয়া দেখে কেঁপে উঠেছিল ফুটবল সমর্থকদের বুক।

গোলের দেখাও ফাইনাল ম্যাচটি পেয়ে যায়। ৫৯ মিনিটে অবশ্য ফাইনাল ম্যাচের প্রথম গোল পেয়ে যায় বায়ার্ন। জোস কিমিখের দারুণ ক্লিপ বক্স থেকে হেড করেন কিংসলে কোম্যান। বায়ার্ন ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। এরপর এমবাপ্পে-নেইমার-মারকুইনহস দারুণ আক্রমণ করেন। নয়্যার বক্সে অটুট ছিলেন। মারকুইনহসের দারুণ শট নয়্যার রুখে দেন। বায়ার্ন আটোসাটো ছিল না। পিএসজি চাপ দিয়েছে। তবে নয়্যার অভিজ্ঞতার সাহায্যে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছেন।

এদিকে বায়ার্ন গোলের একটি রেকর্ড করেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ৫০০ গোল পেয়ে যায় তারা। বায়ার্নের চেয়ে বেশি গোল শুধু এখন রিয়াল মাদ্রিদ (৫৬৭) ও বার্সেলোনার (৫১৭)।

প্যারিসের পথে পথে উৎসব শুরু হয় দুপুর থেকেই। করোনা ভাইরাসের মহামারীকে কোনো তোয়াক্কাই করছে না তারা। ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা লিসবনে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলছে। সেখানে উত্তেজনার পারদ এতটাই উঠেছে যে তারা আর ঘরে বসে থাকেনি। প্রিয় নীল রঙের জার্সি গায়ে দিয়ে হইচই করেছে ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত। নেইমার সেটা জানেন কিনা কে জানে!

ওদিকে লিসবনের স্টেডিয়ামে নেইমারকে দেখা গেল হাতে ফোন ও বসের বিশাল সাউন্ড বক্সে গান শুনতে শুনতে দুলেছেন! ফোনে চেক করেও থাকবেন থিয়েরি অঁরির টুইটার,‘ এখনই সময় ছেলেরা। এটা নিয়ে আসো ফ্রান্সের ফুটবলের জন্য।’ এমবাপ্পেও হালকা মেজাজে ছিলেন। ডি মারিয়াকেও চাপে দেখা যায়নি। পুরো বায়ার্ন মিউনিখ দল আগাগোড়া পেশাদারিত্বের মুখোশ এঁটে স্টেডিয়ামে আসেন। চিরাচরিত জার্মান দল বলতে যা বোঝায়। যেখানে আবেগের জায়গা কোথায়। পিএসজির প্রথম একাদশে ভেরাত্তিকে দেখা যায়নি।

একই ফরম্যাশন দুদলের। সব কিছু ঠিক থাকলেও দর্শকশূন্য চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল মন খারাপ করে দিয়েছে।  নেইমার ও লেভানডফস্কির দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। নেইমার বার্সেলোনার হয়ে শিরোপা জিতেছেন। আর ২০১৩ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে সেবার হতাশ হন লেভানডফস্কি।  ফেসবুকে দুই নারী সমর্থককে নিয়ে সবাই বেশ ট্রল করেছেন। লাল না কালো? যদিও পিএসজির জার্সির রঙ ছিল নীল। আর বায়ার্ন নেমেছিল লাল জার্সিতে।

ম্যাচের শুরুতেই পিএসজির জার্মান কোচ টুখেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বায়ার্নের ফ্লিকের সঙ্গে। দুজনই জার্মান। ৫০ বছরে প্রথম ফাইনাল খেলতে যাওয়া পিএসজি যে নার্ভাস নয় সেটা নেইমার, ডি মারিয়া ও এমবাপ্পে দেখিয়ে দিয়েছেন। আবার বায়ার্ন ছেড়ে কথা বলেনি। ১৮ মিনিটেই এমবাপ্পে দারুণ সুযোগ পান। অভিজ্ঞ গোলরক্ষক নয়্যার রুখে দেন সেটা। ২২ মিনিটে লেভানডফস্কি বক্সের ভেতর থেকে নেয়া শটটি বারে লেগে ফিরে যায়। ২৩ মিনিটেই ডি মারিয়া নয়্যারকে বাগে পেয়েছিলেন।

শটটি বারের ওপর দিয়ে চলেছে। তবে ২৫ মিনিটে বায়ার্নের বোয়েটাং ইনজুরি নিয়ে চলে গেলে ছন্দপতন হয়। ৩১ মিনিটে আবারো লেভানডফস্কি সুযোগ পেয়েছিলেন। কঠিন বল ছিল। হেড করে ব্যর্থ হন তিনি। ৪৫ মিনিটে এমবাপ্পে দারুণ সুযোগ পেয়ে যান। তবে দূর্বল শট নিলে গোলরক্ষক বলটি সহজেই গ্লাভবন্দি করেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে লেভানডফস্কি ১৫টি গোল করেছেন ফাইনালের আগে। প্রথমার্ধে দারুণ কিছু সুযোগ পেয়েছেন। গোল হলে তো দারুণ ব্যাপার ঘটে যেতে পারতো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877