স্পোর্টস ডেস্ক: সরফরাজ হয়তো এখন মুচকি মুচকি হাসছেন। পাকিস্তানকে নিয়ে যে হাসির রোল উঠেছে, তারপরও যদি বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব হয় তাহলে ক্ষতি কী? ইংল্যান্ড বিশ্বকাপকে তো ইতিমধ্যেই ১৯৯২ বিশ্বকাপ বানিয়ে তুলেছে পাকিস্তান।
কিছুটা মিল থাকতেই পারে, তাই বলে এতটা! ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইমরান খানরা ঠিক যেভাবে হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছিল। অবিকল সেভাবেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এগোচ্ছে সরফরাজরা। যেটিকে কাকতাল কেন, ‘কোকিল-তালীয়’ বললেও হয়তো কম বলা হয়!
অনেক দিন পর ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফরম্যাটে খেলা হচ্ছে এবার। প্রত্যেক দলের সঙ্গে প্রত্যেকের খেলা, কোয়ার্টার ফাইনাল বলে কিছুই নেই। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চার দল সরাসরি সেমিফাইনাল খেলবে। সেই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।
ফরম্যাটের মিল দিয়ে শুরু এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান ১৯৯২-এর পথযাত্রা অনুসরণ করছে একদম মেপে মেপে। ওই বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পরাজয় দিয়ে শুরু হয় ইমরান খানদের। কাকতালীয় হলেও সত্যি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও উইন্ডিজদের কাছে ৭ উইকেটে হেরেই পাকিস্তানের এবার বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু। এখানেই শুধু নয়, ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ছয়টি ম্যাচের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে এবার। সেবার প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফল ছিল: পরাজয়, জয়, পরিত্যক্ত, পরাজয়, পরাজয়, জয়। অবিশ্বাস্য হলেও এবারও ঠিক একই পথে এগোচ্ছেন সরফরাজরা।
মিলটা আরও বেশি করে আসছে এ কারণে, ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সপ্তম ম্যাচটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আজ সপ্তম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ কে, সে তো না বলে দিলেও চলছে। ১৯৯২ বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ড অপরাজিত ছিল। পাকিস্তান তাদের হারিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। যে কারণে ইমরানের খানের দলটা ক্রিকেট ইতিহাসে ‘কোণঠাসা বাঘ’ নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। আজকের ম্যাচের ফল কি সেই ধারা অনুসরণ করবে?
১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের উদীয়মান তারকা ছিলেন ইনজামাম-উল-হক। এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে আছেন ইনজিরই ভাস্তে ইমাম-উল হক। সেবার পাকিস্তানের ষষ্ঠ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের নাম ছিল সোহেল (আমির সোহেল)। এবারও পাকিস্তানের ষষ্ঠ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের নাম সোহেল (হারিস সোহেল)। ১৯৯২ বিশ্বকাপের আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়নের নাম ছিল অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৭) ও ভারত (১৯৮৩)। এবারও আগের দুই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া (২০১৫) ও ভারত (২০১১)।
এ তো গেল মাঠের কথা, মাঠের বাইরেও কিছু অদ্ভুতুড়ে মিল রয়েছে। আসিফ আলী জারদারি ১৯৯২ বিশ্বকাপ চলার সময় জেলে ছিলেন। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবারও বিশ্বকাপও জেলে বসেই দেখছেন। মিল তো ছড়িয়ে গেছে হলিউড পর্যন্ত! ১৯৯২ সালে আলাদিন অ্যানিমেশন ছবিটি মুক্তি পায়। নতুন করে বানানো আলাদিন আবার মুক্তি পেয়েছে ২০১৯ সালে!
এত এত কাকতালীয় মিল! পাকিস্তান তো তাহলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েই যাচ্ছে।
দাঁড়ান, দাঁড়ান! বিশ্বসেরা মুকুট কাকতালীয় মিলের জন্য দেওয়া হয় না, দেওয়া হয় মাঠের খেলায় জেতার জন্য। পাকিস্তান কি পারবে?