স্বদেশ ডেস্ক:
এক শ’ বছরেরও বেশি সময় পর ভারতের মুম্বাই সংলগ্ন এলাকায় আছড়ে পড়তে চলেছে কোনো সাইক্লোন। বুধবার বিকেল নাগাদ মুম্বাইয়ে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়তে পারে সাইক্লোন নিসর্গ। মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ১২ ঘণ্টায় সেটি ‘অতি ভারী সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হয়ে ভারী বৃষ্টি এবং ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই থানে, রায়গড়, রত্নগিরি এবং সিন্ধুদুর্গ এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
সাইক্লোন নিসর্গের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। ফলে ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় আবহওয়া দফতর মঙ্গলবার বিকেলে জানায়, ‘আগামী কয়েকঘণ্টায় সেটি উত্তর দিকে ধেয়ে আসতে পারে, তারপর উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে এবং উত্তর মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণ গুজরাট উপকূল দিয়ে মহারাষ্ট্রের আলিবাগ সংলগ্ন এলাকা দিয়ে যেতে পারে ৩ জুন।’
মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট উপকূলবর্তী সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩০টি দল নামানো হয়েছে। প্রতিটি দলে রয়েছেন ৪৫ জন করে কর্মী। অতিরিক্ত ৫টি দল পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে গুজরাটের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে সেখানে ১৫টি দল পৌঁছে যাবে বলে জানান এনডিআরএফ প্রধান এসএন প্রধান। মহারাষ্ট্রে ১০টি দল পাঠানো হয়েছে এবং ৬টি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গুজরাটের ভালসাড় এবং নবসারি জেলার ৪৭টি গ্রামের ২০ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। ভালসাড় জেলাশাসক আর আর রাভালকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘ইতিমধ্যেই আমরা আশ্রয়ের জন্য ঘর চিহ্নিত করেছি এবং ৩৫টি গ্রামের ১০ হাজার মানুষকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।’ প্রতিবেশি নবসারি জেলায় ১২টি গ্রামের ১০ হাজার ২০০ লোককে সরানো শুরু হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে বিপজ্জনক অবস্থানে রয়েছে করোনাভাইরাস। সেরাজ্যে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৭০ হাজার মানুষ এবং মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩৬২। ইতিমধ্যেই চাপে রয়েছে হাসপাতালগুলো ও আইনশৃঙ্খলা বিভাগ। মুম্বাইয়েই এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৪১ হাজার মানুষ।
দু সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে ভারতে আঘাত হানতে যাওয়া এটি দ্বিতীয় সাইক্লোন। গতমাসে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘুর্ণিঝড় আমফান আছড়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িষ্যা উপকূলে। ফলে সেখানে প্রায় ১০০ লোকের মৃত্যু হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। এ রাজ্যে ১ লাখ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৮১ সালে সাইক্লোনের কবলে পড়েছিল মুম্বাই।
সূত্র : এনডিটিভি