বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন

স্বরূপকাঠি উপজেলার চামী এলাকায় আম্পানে লবন চাষীদের মাথায় হাত, পথের ফকির মাছ চাষীরা

স্বরূপকাঠি উপজেলার চামী এলাকায় আম্পানে লবন চাষীদের মাথায় হাত, পথের ফকির মাছ চাষীরা

পিরোজপুর জেলাপ্রতিনিধি : “খরার উপরে মরার ঘা পিরোজপুর জেলার    নেছারাবাদ উপজেলায় লবন চাষী ও মাছ চাষীদের।নেছারাবাদ উপজেলার   মধ্যে বলদিয়া ইউনিয়নের চামী সহ বেশির ভাগ     গ্রামে আম্পানের কারণে চাষীরা পথে বসে গেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এত পানির চাপ স্বরূপকাঠি বাসীরা চেখে দেখিনি। বরং সুপার সাইক্লোন আম্পানের বদৌলতে দুঃসহ স্মৃতি রেখে গেছে মানবকূলের মধ্যে। আম্পানের কারণে নেছারাবাদ উপজেলার মধ্যে বলদিয়া ইউনিয়নে লবন চাষীদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। শুধু  চামী গ্রামের মধ্যে লবন চাষীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী  ।  আর হ্যা বলছিলাম চামী গ্রামের মৃত শাহাবুদ্দিনের   ছেলে সাবেক জনপ্রিয় মোম্বর মোঃ আনোয়ার হোসেনের   কথা। সমাজ সেবার পাশাপাশি বেচে থাকার তাগিদে  বলদিয়া ইউনিয়নের মধ্যে চামী গ্রামে লক্ষাধীক টাকা নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যাবসা শুরু করেন বিগত সময় থেকেই।  অথচ বুধবারের সুপার সাইক্লোন আম্পানের কারণে সকল আশা লন্ড ভন্ড হয়ে যায় কোন কিছুর আচ  করার আগেই। মুহুর্তের মধ্যে পূবাল বাতাশের শো শো শব্দে পানির চাপ বাড়তে থাকে। কোন বাধাই থামাতে পারেনি মানব কুলের কেহই। অথচ অসময়ে সাত আট ফিট পানির গতিতে কাঁচা মাটিতে স্থাপন করা লবন মিলের সকল কাঁচা মাল মুহুর্তের মধ্যে গলে যায়। ধরে রাখার কোন বিকল্প পথও ছিলো না। শুধু চোখের পলকে সব শেষ হয়েছে শতভাগ নিঃস্ব করে। চামী গ্রামের মধ্যে শুধু সাবেক মেম্বার মোঃ আনোয়ার হোসেনেরই ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকার মত। পাশাপাশি গ্রামের আর ক্ষতি সাধন হয়েছে রিদুল সহ মোঃ হান্নান ও  আবুল হোসেনের মত বহু লবন চাষীদের। গড়ে চামী গ্রামের প্রতি জনের ক্ষতির পরিমান প্রায় দুই লক্ষ টাকার মত। এ ব্যাপারে চামী গ্রামের সাবেক মেম্বার মোঃ আনোয়ার হোসেন জেলার গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার লবন মিলে ব্যাপক ক্ষতির কারণে আমি একদম শেষ হয়ে গেছি। বিভিন্ন এন জিও  সহ ব্যংক লোনের কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। প্রতি মাসের কিস্তি পরিশোধ করা কোন রকম সম্ভব নয়। আম্পানের কারণে আকর্ষিক ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা এ-সময় কোন রকম সম্ভব নয়। তাছাড়া করোনার আতঙ্কে সকলেই আতঙ্কিত। লক ডাউনের কারণে সমস্ত ব্যাবসা বানিজ্য চরম মন্দা ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বেচা কেনা শূন্যের কোঠায়। তাই সরকারের সুদৃষ্টি অতীব জরুরী ভাবে দরকার।
এদিকে  লবন চাষের পাশাপাশি মাছের ঘেরে পানি প্রবেশ করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ বের হয়ে যায় চোখের নিমিষে। পানির প্রচন্ড চাপে মাছের ঘেরের বাঁধ ভেঙে গিয়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া সহ হরেক পদের মাছের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। বাজার ধর অনুযায়ী মোঃ আনোয়ার হোসেনের মাছের ঘেরে প্রায় দুই লক্ষ টাকার মাছ বের হয়ে যায়। পাশাপাশি একই ইউনিয়নের রাজাবাড়ি এলাকার সাবেক মেম্বার মোঃ সোহাগ মিয়ারও মাছের ঘেরে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। স্থানীয় সূত্র মতে সোহাগ মেম্বরের প্রায় ৪ লক্ষ টাকার মত মাছ বের হয়ে যায় আম্পানের কারণে। সরেজমিনে জেলার গণ মাধ্যম কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আর তথ্য বের করার চেষ্টা করেন। গড়ে বলদিয়া ইউনিয়নের মধ্যে শুধু মাছের ঘেরে ক্ষতি সাধন হয়েছে প্রায় কোটি টাকার উপরে। আর সমগ্র উপজেলায় মাছের ঘেরে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার মত। এ ব্যপারে সাবেক মেম্বার মোঃ সোহাগ মিয়া বলেন, আসলে আমি সহ কয়েক শতাধিক পোল্ট্রি ব্যাবসায়ীরা একদম নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। আমি মাছ চাষ করে ভালোই ছিলাম কিন্তু এক আম্পানের কারণে পথে বসে পড়েছি। সব শেষ হয়েছে শতভাগ আমার। গত বুলবুলির কারণে মুরগির ফার্মে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। সেই ক্ষতি এখনো পুষিয়ে   উঠতে পারিনাই। এর পর আবার সুপার সাইক্লোন আম্পানের কারণে আমি সহ গ্রামের অনেকেই প্রায় শেষ। বাঁচার কোন গতি নেই সর্বশেষ আম্পানের কারণে। সরকারের সুদৃষ্টি না দিলে আমাদের ভিক্ষা ছাড়া কোন গতি নেই।                                সর্বশেষ কথা হয় উপজেলা পশু ও  প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে। তিনি জেলার গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, আসলে প্রাকৃতিক বালা মছিবত কখন কার ক্ষতি সাধন হবে তা বলা মুশকিল। তবে সরকারের সদিচ্ছার কোন ঘাটতি নেই। সরকারের সুদৃষ্টি আছে সব সময় আর মাছ চাষীরা সহ পোল্ট্রি খামারি, লবন চাষীদের দিকে সরকারের সুনজর সবসময়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877