রাজশাহীর তানোর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেক তার নিজের উদ্যোগে করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগে অসহায় ও নিরন্ন মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণকালে গতকাল বিকেলে তানোর পৌর এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে ৬ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশব্যাপী ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের চাল কেলেঙ্কারীর মতো অপকর্ম ঢাকতেই তরুণ ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের অপকর্মের কারণেই এই মহাদুর্যোগের সময় দেশে আরও অনিশ্চয়তার অন্ধকার নেমে এসেছে। তাই দলীয় লোকজনদেরকে দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হিংস্র আচরণ করানো হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সকাল থেকে তানোর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে করোনাভাইরাসের মহামারীতে আতঙ্কগ্রস্ত কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বিকেলে পৌর এলাকার ৫০০ সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দেয় এবং সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করে। করোনাভাইরাসের দুর্যোগে যখন দুর্ভিক্ষের ছায়া বিরাজমান তখন ক্ষুধার্ত ও নিরন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় সেটিকে বাধা দেয়ার ঘটনা বিদ্যমান দু:শাসনেরই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রতিনিয়ত দেশব্যাপী সরকারদলীয় লোকজনদের দ্বারা ত্রাণ সামগ্রী চুরির ঘটনা ঘটছে এবং তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভ্রুক্ষেপহীন থাকছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও পুলিশী ক্ষমতার যথেচ্ছ প্রয়োগ থেমে নেই। বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নিজ উদ্যেগে সারাদেশে সুবিধাবঞ্চিত খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের মাঝে যখন মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তখন এই মানবিক উদ্যমকে সহ্য করতে পারছে না সরকার। এই করোনা মহামারীর মধ্যেও দলমত নির্বিশেষে সমন্বিত উদ্যোগ দুরে থাক, বরং সরকার এক অশুভ অভিপ্রায় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ত্রাণ কর্মকান্ড চালানোর সময় ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেককে গ্রেফতার ও কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে প্রেরণ দৃষ্টান্তমূলক দুঃশাসনেরই নমুনা। আমি ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাসহ দন্ডাদেশ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
একই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রদলে কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, তানোর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অসহায় দুস্থদের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাঁধা দিয়ে ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে ৬ মাসের জেল দেয়। ত্রাণ দিতে গিয়ে এমন অমানবিক কান্ড বিশ্ববাসী এর আগে দেখেনি। আর আওয়ামী লীগ সরকার না থাকলে এটা দেখতো কিনা সেটাও সন্দেহ। প্রতিদিন আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ, যুবলীগের চাল চুরি ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ছবি খবর প্রকাশ হওয়ার পরও পুলিশ তাদের খুঁজে পায়না। অথচ ছাত্রদলের সাহসী নেতা-কর্মীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে তখন হিংসাশ্রয়ী হয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অবিলম্বে আবদুল মালেক সহ আটক সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি করেন নেতৃদ্বয়।