রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

করোনায় ব্রিটেনে ৩ কিশোরের মৃত্যু : জনমনে আতঙ্ক

করোনায় ব্রিটেনে ৩ কিশোরের মৃত্যু : জনমনে আতঙ্ক

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষ মারা গেলেও ব্রিটেনে তিন কিশোর মারা যাওয়ায় আতঙ্কিত ব্রিটেনের লোকজন। এদিকে ব্রিটেনে করোনাভাইরাসে বুধবার আরো ৫৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, জানুয়ারির শেষে ব্রিটেনে প্রথম কোভিড-১৯ মৃত্যু ঘটনা রেকর্ড হওয়ার পর এ বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজার ৩৫২ জনে পৌঁছালো। এদের মধ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশী ১৭ জন। গত মঙ্গলবার থেকে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩২৪ জন। এর ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৪৭৪ জনে।

ব্রিটেনে গত দুই দিনে মারা যাওয়া দুই কিশোরই রাজধানী লন্ডনের। ১৩ বছরের কিশোর দক্ষিণ লন্ডনের ব্রিক্সন এলাকার আর ১৯ বছরের যুবক উত্তর লন্ডনের এনফিল্ডের। তারা উভয়ই স্বাস্থ্যবান ছিল, তাদের শরীরে অন্য কোনো সমস্যা ছিল না। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে তারা মারা যায়। এর আগে ২৫ মার্চে ১৮ বছরের আরেক যুবক মারা গিয়েছিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে। সে রাজধানীর বাইরে কভেন্ট্রি এলাকায় বাস করতো।

১৩ বছরের যুবক মোহাম্মেদ ইসমাইল আব্দুল ওয়াহাবের এক স্বজন স্কাই নিউজকে জানান, সে স্কুলে পড়াশুনা করতো। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় সে বাসায়ই থাকত বেশির ভাগ। তবে মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বা কিছু কিনতে বাইরে যেত, তাও বাসার কাছে। গত ২৪ মার্চ মঙ্গলবার তার শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। সেসময় সে প্রচণ্ড শ্বাস কষ্টে ভুগছিলো। তার স্বজন তাকে কিংস কলেজ লন্ডনে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে ভেন্টিলেটরে রাখে। পরে অবস্থা খারাপ হলে তাকে কোমায় রাখা হয়। সেখানেই সে ৩০ মার্চ সোমবার মারা যায়। তার বড় ভাই স্থানীয় মদিনা স্কুলের শিক্ষক । তার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে।

কিংস কলেজ হাসপাতাল ইসমাইলের মৃত্যুর পর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে , ১৩ বছরের ইসমাইলের শরীরে কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার আগে তার কোনো শারীরিক সমস্যা ছিলো না। সে খুবই স্বাস্থ্যবান ছিল। আমরা তার পরিবার ও আত্মীয়দের প্রতি গভীর সহানুভুতি প্রকাশ করছি।

১৯ বছরের যুবক লুসা ডি নিকোলা ছিলো ইতালি বংশোদ্ভুত। লন্ডনে সে একটি রেস্টুরেন্টে শেফ হিসেবে কাজ করত। নিকোলার বাবা মিরকো স্থানীয় পত্রিকা লা রিপাবলিকাকে জানান, তার ছেলে গত এক সপ্তাহ অসুস্থ্ ছিল। একারণে স্থানীয় জেনারেল ফিজিশিয়ানের ( জিপি) কাছে গেলে সে তাকে প্যারাসিটামল দেয়। এছাড়া জিপি বলেন, নিকোলা যথেষ্ট ইয়ং এবং শক্তিশালী। ওই খারাপ ফ্লুর (করোনা) বিষয়ে তার চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ২৩ মার্চ সোমবার রাতে সে অসুস্থ বোধ করে। পরের দিন মঙ্গলবার বিকেলে তার বুকে ব্যথা শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা এম্বুলেন্স ডেকে তাকে এনফিল্ডের নর্থ মিডলসেক্স হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার ৩০ মিনিট পরেই সে নিউমোনিয়া কারণে মারা গেছে বলে বলা হয়। কিন্তু পরে ব্রিটিশ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ এক ইমেইলে তার বাবাকে জানায়, পোস্ট মার্টেমেরে পর নিকোলার শরীরে কোভিড-১৯ ছিল বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।

এদিকে বুধবার আরো একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশী করোনায় ইন্তেকাল করেছেন। সকাল ১০টায় পূর্ব লন্ডনের লুইসামের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার নাম মোহাম্মদ তোয়াহিদ আলী (৭৫)। মরহুমের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের মুফতির গাঁও গ্রামে।

এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে মারা গেছেন ১৭ বাংলাদেশী। গত ৮ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল বুধবার পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়। গত দুই দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ ব্রিটিশ বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877