স্বদেশ ডেস্ক:
দেশব্যাপী চলমান হাড় কাঁপানো শীতের উন্নতি হবে আজ থেকে। আজই ঠাণ্ডাটা পুরোপুরি হয়তো চলে যাবে না। তবে আজ থেকে তাপমাত্রা সামান্য কিছু বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অফিস স্পষ্ট করে বলেছে, গত রাতের (রোববার দিবাগত রাত) এবং দিনের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তবে তাপমাত্রা বাড়লে আজো দেশের কিছু অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে। ঠাণ্ডাজনিত কারণে গতকাল রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে শুধুমাত্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৭৪১ জন।
এ ছাড়া শীতজনিত কারণে মানুষ আমাশয়, জন্ডিস, চর্মরোগ ও চোখের প্রদাহে ভুগছে। এর পরিমাণও কম নয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন্স অ্যান্ড কনট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা: আয়েশা আক্তার জানান, ডায়রিয়া ছাড়াও গতকাল আমাশয়, জন্ডিস, চর্মরোগ ও চোখের প্রদাহে গতকাল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে এক হাজার ৭৯৩ জন। হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ার মতো রোগে গতকাল আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭২০ জন।
আবহাওয়া অফিস বলছে, গতকাল রোববার সারাদিনই রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এটা আজো কিছু কিছু এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে। গত কয়েক দিন দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে যে ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে গেছে ক আজ থেকে তা আর থাকবে না। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের কারণেই এমনটা ঘটে থাকে। ঠাণ্ডা আবহাওয়ার এই প্রক্রিয়াটা উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে সরে গিয়ে অবস্থান করছে ভারতের বিহার রাজ্যে।
তবে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও বাংলাদেশে স্বাভাবিক ঠাণ্ডা অবস্থা থাকবেই। কারণ এখন পৌষ মাস।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের অনেক অঞ্চলের তাপমাত্রা গতকাল ৯ ডিগ্রির কাছাকাছিই ছিল। বাংলাদেশের সবগুলো উপজেলায় আবহাওয়া অফিস নেই। ফলে সব অঞ্চলের সঠিক তাপমাত্রা দেয়া সম্ভব হয় না। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ৪৩ স্থানে আবহাওয়া অফিস রয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, জাতীয়ভাবে কেবল এই ৪৩ স্থানের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাওয়া যায়। এর বাইরের অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা শীতের দিনে কতটা নিচে নামে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ কেউ ব্যক্তিগত তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র দিয়ে মাপতে চেষ্টা করেন।
কিন্তু আবহাওয়া অফিস বলছে, ওইসব ব্যক্তিগত তাপ মাপার যন্ত্র সঠিকভাবে ‘রিডিং’ দেয় না। দেশের অন্যান্য স্থানে তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও কেউ জানবে না।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে গতকাল রাজশাহী, ঈশ্বরদী ও তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় সর্বনিম্ন ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকা বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মাদারীপুরে ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যতম শীতল স্থান শ্রীমঙ্গলে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই তাপমাত্রা গত ২০ ডিসেম্বরের চেয়ে দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ সোমবার এ তাপমাত্রার আরও উন্নতি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস আগামী দুই দিন যাবত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে। তবে পাঁচদিন পর দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।