শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

স্বদেশ ডেস্ক:

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠানে স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার লাশ রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে স্যার আবেদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত স্যার আবেদ অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

বাংলাদেশ ও এর বাইরে লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে ও মর্যাদা পেতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন স্যার আবেদ। বাংলাদেশের ব্র্যাককে তিনি সারাবিশ্বে পরিচিত, সবচেয়ে বড় ও সম্মানিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে যেমন কাজ করেছেন, তেমনি গড়ে তুলেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক ব্যাংক, বিকাশ ও আড়ংয়ের মতো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান।

১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তদানীন্তন সিলেটের হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লন্ডনে অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পড়ালেখা এবং ১৯৬২ সালে কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে উত্তীর্ণ হন। তিনি পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানিতে সিনিয়র করপোরেট এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ তার জীবনের মোড় সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চাকরি ছেড়ে লন্ডনে চলে যান এবং সেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ এবং ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামে দুটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর ১৯৭২ সালে স্যার আবেদ দেশে ফিরে আসেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ভারত-প্রত্যাগত শরণার্থীদের জরুরি ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে আত্মনিয়োগ করেন। এ লক্ষ্যে তিনি ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত শাল্লা এলাকায় ফিরে আসা শরণার্থীদের নিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন।

স্যার আবেদ ৩৬ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে তদানীন্তন সিলেট জেলায় একটি ক্ষুদ্র ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প হিসেবে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন। মাইক্রোফাইন্যান্স, সামাজিক ব্যবসা, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে নানামাত্রিক বিনিয়োগের সমন্বয়ে ব্র্যাক এখন বিশ্বের বুকে এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি এশিয়া ও আফ্রিকার ১১টি দেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত টানা চার বছর জেনেভাভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা ‘এনজিও অ্যাডভাইজার’ কর্তৃক ব্র্যাক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারী ও শিশু উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় স্যার আবেদকে গত ২০ নভেম্বর নেদারল্যান্ডের রাজার পক্ষ থেকে নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অফ অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের রানি কর্তৃক ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত হন।

স্যার আবেদের বর্ণাঢ্য পথচলাকে ’পরিপূর্ণ জীবনের প্রতিকৃতি’ হিসাবে বর্ণনা করেছে ব্র্যাক। সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877