স্বদেশ রিপোর্ট: নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটনে বার্নার্ড কলেজের শিক্ষার্থী টেসা রানে মেজরস (১৮) হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তারে করেছে পুলিশ। সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১ ডিসেম্বর রাতে ম্যানহাটনের বার্নার্ড কলেজ ক্যাম্পাসের কাছেই মর্নিংসাইড পার্ক থেকে বার্নার্ড কলেজের শিক্ষার্থী টেসা রানে মেজরসের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছুরিকাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় ১২ ডিসেম্বর ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দেখা পোশাকের সঙ্গে এই সন্দেহভাজন কিশোরের পোশাক মিলে গেছে। ১৩ ডিসেম্বর পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার করা কিশোরের কাছ থেকে একটি ছুরি জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর জানিয়েছে, সে ছাড়া আরও দুজন মিলে টেসা মেজরসকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। ওই দুজনের একজনকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। আরেকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের চিফ অব প্যাট্রল সার্ভিস রডনি হ্যারিসন জানান, সন্দেহ করা হচ্ছে ঘটনায় জড়িত কিশোরেরা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ম্যানহাটনের ওয়েস্ট ১১৬ স্ট্রিটের কাছে মর্নিংসাইড পার্কে তারা টেসা মেজরসকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে ওই কিশোরেরা। টেসা বাধা দেয়। এতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয় একটি স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী বিষয়টি দেখে ৯১১–এ ফোন দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত টেসাকে নিয়ে মাউন্ট সিনাই সেন্ট লুকস হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক টেসাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিউইয়র্ক পুলিশকে জানিয়েছে, টেসা মেজরস ওই পার্কে চার বা পাঁচজন পুরুষের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিলেন। তিনি তাঁদের ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বলেন, পার্কে টেসা মেজরস যেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন, পাশেই তাঁর মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনো পার্স বা ওয়ালেট পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরপরই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। টেসা মেজরসের পরিবার ১৩ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা পরিবারের খুবই বিশেষ ও মেধাবী একজনকে হারালাম।’ চলতি বছর টেসা ওই কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট শেষ করেছেন। সেন্ট অ্যানে’স-বেলফিল্ড স্কুলের প্রধান ডেভিড লরি বলেন, টেসা আমাদের কমিউনিটিতে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি একজন দুর্দান্ত মিউজিশিয়ান। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ গ্রেপ্তার কিশোরের বিরুদ্ধে হত্যায় দ্বিতীয় মাত্রা, ডাকাতি ও অস্ত্র রাখায় প্রথম মাত্রার অভিযোগ আনার সুপারিশ করেছে। বিচারক সিদ্ধান্ত দেবেন তার বিরুদ্ধে আসলে কোন অভিযোগ আনা যাবে এবং প্রাপ্ত বয়স্ক নাকি কিশোর অপরাধের বিচার হবে। রডনি হ্যারিসন জানান, এ ঘটনার পর নিউইয়র্ক পুলিশ মর্নিংসাইড পার্ক ও আশপাশের স্কুল এলাকায় নিরাপত্তা টহল জোরদার করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রিসিঙ্কটে ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ সাল সময়ের মধ্যে বড় ধরনের অপরাধের মাত্রা ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এসেছে। তবে চলতি বছরেই মর্নিংসাইড পার্ক এলাকায় ১৭টি ডাকাতির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।