শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মুন সিনেমা হল মালিককে ১০০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর

মুন সিনেমা হল মালিককে ১০০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর

স্বদেশ ডেস্ক:

পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিক ইটালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলমের হাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মুন সিনেমা হলের ওই জায়গা আগামীকাল বুধবারের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত এ বিষয়টি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেওয়ার জন্য ৫ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

এদিন মাকসুদুল আলমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি এবং সরকারের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

জানা যায়, পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে একসময়ে মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। পরে ইটালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলা হয়। ইটালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন। ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে মোশতাক, সায়েম ও জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণের বৈধতা দেওয়া সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ও সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইটালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সিনেমা হল ফেরত না পেয়ে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এক পর্যায়ে জানা যায়, মুন সিনেমা হলের জায়গায় একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে দিয়ে একটি বিশাল মার্কেট তৈরি করেছে তা সেলামি মূল্যে বিক্রি করেছে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট। তাই ওই সিনেমা হলের জায়গা আর ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।

এ অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই সম্পত্তি অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ এক প্রকৌশলীকে দিয়ে জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে দিয়ে এই মূল্য নির্ধারণ করতে বলা হয়।

পরবর্তীতে জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি ওই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। এই প্রতিবেদন সরকার আদালতে দাখিল করে। এরপর আপিল বিভাগ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিলে গত ২১ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেল ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৪ হাজার টাকার একটি চেক আপিল বিভাগে দাখিল করেন। যে চেকটি ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডের এমডি মাকসুদুল আলমের হাতে হস্তান্তর করে জমিটি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টেও নামে আগামীকালের মধ্যে রেজিস্ট্রির নির্দেশ দেওয়া হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877