সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন

বাড়ির আঙিনা থেকে তুলে নিয়ে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ২

বাড়ির আঙিনা থেকে তুলে নিয়ে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ২

স্বদেশ ডেস্ক:

বরিশালের উজিরপুরে এক স্কুল ছাত্রীকে বাড়ির আঙিনা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে নুর ইসলাম বয়াতী (৩০) ও তরিকুল (১৯) নামের দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সাথে ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীকে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা রাতে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পটিবাড়ি এলাকার এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মামলা দায়ের করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট এলাকার আয়নাল বয়াতীর ছেলে নুরুল ইসলাম বয়াতী ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কালারবাড়ি এলাকার আলী আকবরের ছেলে তরিকুল ইসলাম (১৯)। তারা সাতলা পটিবাড়ি এলাকার ওমর নামের এক ব্যক্তির মাছের ঘের ও মুরগির খামারের কর্মচারি ছিলো।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর নিকটাত্মীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাতলা পটিবাড়ি গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার ভাগ্নী অনুরাধাকে (৬) নিয়ে বাড়ির পাশেই ছোট চাচা নিহার বাইনের বাড়িতে যায়। কিছু সময় পরে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলো। বাড়ির উত্তর পাশের পুকুর পাড় নামকস্থানে পৌঁছলে ওই ছাত্রীকে পেছন থেকে কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে পাশের একটি টয়লেটের মধ্যে আটকে রাখে বখাটে নুর ইসলাম ও তরিকুল। এ সময় ওই ছাত্রীর সাথে থাকা শিশু অনুরাধাকে বখাটেরা ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং অনুরাধা বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ততক্ষণে ওই ছাত্রীকে টয়লেট থেকে সড়িয়ে ওমরের মাছের ঘেরে থাকা নৌকার মধ্যে আটকে বখাটেরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর সেখান থেকে তাকে (ছাত্রী) নিয়ে ঘের সংলগ্ন তাদের থাকার ঘরে আটকে একইভাবে ধর্ষণ করে ওই বখাটেরা।

রাত ১০টার দিকে ঘেরের পানিতে গলা পর্যন্ত চুবিয়ে ঘের সংলগ্ন মুরগির খামারের নীচে খুঁটির সাথে তার হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে রাখে। এদিকে স্বজনদের খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই স্কুল ছাত্রীকে রাত ১১টার দিকে ঘেরের পুকুর থেকে মুখে পলিথিন ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। ওই স্কুল ছাত্রীর খালু অমল বল্লভ জানান, ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর বখাটে নুর ইসলাম ও তরিকুলকে ঘের সংলগ্ন তাদের থাকার ঘর থেকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে স্থানীয়রা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

এ সময় স্থানীয়রা ওই বখাটেদের চড়-থাপ্পড় দিলে তারা স্থানীয় হরশিত মন্ডল ও সূর্যকান্ত মন্ডলের নির্দেশে এ ধরনের কাজ করেছে বলে স্বীকার করে। শুক্রবার দুপুরে অমল বল্লভ আরও জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার ভায়রা মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পুলিশ বরিশাল পাঠিয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর সঠিকভাবে জানা যাবে । এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।

ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী জানায়, ওই বখাটেরা তাকে বাড়ির উত্তর পাশের ওই রাস্তা থেকে চোখ-মুখ বেঁধে প্রথমে টয়লেটের মধ্যে আটকে রাখে। পরে পাশ্ববর্তী ওমরের মাছের ঘেরের মধ্যে থাকা নৌকায় ও মুরগির খামার লাগোয়া একটি ছোট্ট ঘরে আটকে ওই দুই বখাটে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর মুরগীর ফার্মের নীচে খুঁটির সাথে হাত-পাঁ ও চোখ বেঁধে ফেলে রাখে।

স্কুল ছাত্রীর মা শিখা বাইন জানান, ‘আমার মেয়ের সাথে ওই বখাটেরা যেটা করেছে তার উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার। যাতে আর কোনো মেয়ের জীবনে এমনটা না ঘটে। আমি ওদের বিচার চাই।’ এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, ‘ওই ছাত্রীর দায়ের করা গণধর্ষণ মামলায় ২ যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। পাশাপাশি ভিকটিমকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877