শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

স্বদেশ ডেস্ক ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ায় সংসদে দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, ’আমি একটা ভুল করেছি। তার জন্য শহীদ নূর হোসেনের মায়ের কাছে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছি। আর বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ভুল কিছু যদি বলে থাকি সেজন্যও সবার কাছে করজোড়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থণা করছি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদ অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ২৭৪ বিধি অনুযায়ী ব্যক্তিগত কৈফিয়ত দিতে দাঁড়িয়ে তিনি এই ক্ষমা প্রার্থণা করেন।
মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, গত ১০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্র দিবস পালন নিয়ে একটি সভা ছিল ছোট পরিসরে। মাইক বাইরে ছিল না, ভেতরে সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে আমরা কথা বলেছি। পুরান ঢাকা থেকে যখন আমাদের দলের কিছু লোক ওই বৈঠকে আসছিলেন, নূর হেসেন চত্ত্বরে এরশাদ সাহেবকে গালাগালি করে কিছু স্লোগান দেয়া হয়।
এসব কথা তারা দলীয় কার্যালয়ে এসে বলেন। দলের মহাসচিব হিসেবে আমি কর্মীদের শান্ত থাকতে বলি। এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা তীব্র হৈ চৈ করে তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এ সময় জাপা মহাসচিব বলেন, সংসদে আমার বক্তব্য নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন।
আমি মনে করি সিনিয়র মন্ত্রী-নেতারা আমাকে শাসন করে বক্তব্য দিয়েছেন। তবে আমি একটা ভুল করেছি, ভুল করার জন্য শহীদ নূর হোসেনের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থণা করেছি এবং বিবৃতি পর্যন্ত দিয়েছি। তিনি বলেন, সংসদের প্রথম দিন প্রয়াত মন্ত্রী আশরাফুল ইসলামের পরিবর্তে ৩৭টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম। তখন অজস্র বার জয় বাংলা বলেছি, জাতির পিতা সম্পর্কে বলেছি। তাই জাতির পিতা নিয়ে যদি আমার কোনো রকম কিংবা কোন কিছু ভুল বলে থাকি সেজন্য আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, অনুষ্ঠানে আমি কখনোই সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতিবাজ এগুলো বলিনি। আমি বলেছি, বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হয়েছে, ক্যাসিনো নিয়েও বিচার হয়েছে। আমি বলেছি, ১৯৯০ সালের পর যখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসলেন তখন সারের জন্য ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। এই অস্ত্র বাইরের দেশ থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল তৎকালীন বিরোধী দলের নেতাকে হত্যার জন্য। এই কথাগুলো রেকর্ড আছে।
সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে জাপা মহাসচিব বলেন, তারপরেও আমি নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাচ্ছি যদি এটা ভুল করে থাকি। অবশ্যই আমি করজোড়ে তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার সহকর্মী আছেন তারা এটা শুনে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আমার দল ক্ষমতায় থাকলেও হয়তো মন্ত্রী হতে পারতাম না, প্রধানমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। আমাকে স্নেহ করতেন, অনেক ভালবাসতেন। আমি মনে করি উনার সঙ্গে আমার সেই সম্পর্কটা থাকবে। আমি কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি সমস্ত দোষ আমার ঘাড়ে নিচ্ছি। আমার হয়তো বলতে ভুলত্রুটি হতে পারে। এরপর বিএনপির হারুনুর রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার বক্তব্যে কথা বলতে চাইলে বিধি অনুযায়ী না হওয়ায় তার ফ্লোর বন্ধ করে দেয়া হয়। হারুনুর রশীদ বলেন, বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে গেলে তাকে আর ফেরত আনা যায় না। অনেক রক্তের বিনিময়ে এদেশে গণতন্ত্র এসেছে। তাই শহীদ নূর হোসেনের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেই সবকিছু শেষ হয়ে যায় না। এরপর স্পিকার তার ফ্লোর বন্ধ করে দেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877