স্বদেশ ডেস্ক ॥ মালদ্বীপ এবং মরিশাসের আদলে আন্দামানকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের চারটি দ্বীপে চারটি রিসর্ট, ট্রি হাউস এবং তাঁবু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্মিলিত ভাবে এই রিসর্ট, ট্রি হাউস এবং টেন্টগুলিতে ৪৬০টি ঘর থাকবে।
বেসরকারি সংস্থাকে এই উদ্যোগে সামিল করতে দরপত্র আহ্বান করেছে কেন্দ্র। রিসর্ট, তাঁবু, ট্রি-হাউসের নক্সা তৈরি থেকে শুরু করে তা নির্মাণ, বিনিয়োগ, পরিচালনা এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তা কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের পথে যেতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ এই মন্ত্রকের হাতেই রয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, লং আইল্যান্ডের লালাজি বে’র উপর ২২০ ঘরের একটি ইকো-ট্যুরিজম রিসর্ট, স্মিথ আইল্যান্ডে ৭০ ঘরের ইকো-ট্যুরিজম টেন্ট এবং ট্রি হাউস, এভস আইল্যান্ডে ৫০ ঘরের একই ধরনের তাবু এবং নীল আইল্যান্ডের শহীদ দ্বীপে ১২০ ঘরের একটি ইকো-ট্যুরিজম রিসর্ট তৈরি করা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, ‘এই চার পিপিপি প্রকল্পে প্রিমিয়াম টেন্ট এবং ট্রি হাউস, ম্যানগ্রোভ ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার, কচ্ছপ পরিদর্শন কেন্দ্র, দ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর সুবিধা, সমুদ্রতট ছাউনি, সানরাইজ পয়েন্ট, প্রিমিয়াম রিসর্ট, সমুদ্রতটে বেড়াবার রাস্তা, প্রাকৃতিক ভ্রমণ এবং ক্যাম্প করে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।’
প্রকল্প রূপায়ণে ৬৫০ কোটি টাকা লগ্নি হবে এবং ৬০ শতাংশ স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ পাবেন। ছোট-বড় ৮৩৬টি দ্বীপ, পাহাড় জুড়ে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ছড়িয়ে রয়েছে। পর্যটন ব্যবসার প্রসারে ইতিমধ্যেই ৩০টি দ্বীপকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’-র বাইরে আনা হয়েছে। আন্দামানে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশি পর্যটকদের নথিভুক্তিকরণের যে নিয়ম ছিল তাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
ওয়াটার স্পোর্টস থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন হওয়ায় নিয়ম ও নির্দেশিকা শিথিল করা হয়েছে। পর্যটকদের সুরক্ষার পাশাপাশি ওয়াটার স্পোর্টস সংস্থাগুলির স্বার্থও দেখা হচ্ছে। বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট প্রকল্পে ৪০টি হোম স্টে নাম নথিভুক্ত করেছে। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১২১টি ট্যুর অপারেটর নাম নথিভুক্ত করেছে। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নেতজি সুভাষ চন্দ্র বোস আইল্যান্ডে (রস আইল্যান্ড) অত্যাধুনিক লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-র ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিভিন্ন দ্বীপে ভাসমান জেটি ও অর্কিড ও প্রজাপতির বাগান তৈরি করা হচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ১৬ লক্ষের বেশি পর্যটক পেয়েছে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।