শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ন

ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির যত্ন

ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির যত্ন

স্বদেশ ডেস্ক:

ডায়াবেটিস হলে কীভাবে কিডনি ভালো রাখবেন জানালেন ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের প্রধান পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার

কিডনি কেবল ডায়াবেটিসেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা নয়। আবার ডায়াবেটিস না থাকলে কিডনি সমস্যা হয় না, তা-ও নয়। বিভিন্ন কারণেই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ডায়াবেটিসে কিডনি ঝুঁকির মধ্যে থাকতে পারে। কিছু কিছু সাবধানতা থাকলে ডায়াবেটিস

থাকলেও কিডনি সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তনালি ধমনির মাধ্যমে দূষিত রক্ত ফিল্টারের জন্য কিডনিতে প্রবেশ করে। এরপর এগুলো ছোট রক্তনালিগুলোর ক্লাস্টারের মধ্য দিয়ে যায়। ক্লাস্টারগুলো (‘গ্লোমেরুলি’) ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। পরিষ্কার বা ফিল্টার করা রক্ত শরীরে ফিরে আসে একটি শিরার মাধ্যমে। তখন বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। রক্তে উচ্চ শর্করা এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ফিল্টারগুলোর ক্ষতি হতে পারে। ক্ষতির কারণে প্রস্রাবে প্রোটিন বের হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিসের ১০-১২ বছর পর থেকে কিডনির ক্ষতি শুরু হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত কিডনি তখন রক্ত পরিষ্কার করতে থাকায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনও হতে পারে, কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। কিডনির ক্ষতি রোধ করতে বা এর অগ্রগতি বন্ধ করতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

ঝুঁকি কাদের বেশি

পরিবারে ডায়াবেটিস এমনকি কারও কিডনি সমস্যা আছে কি না। থাকলে ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি। আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পুরুষদের কিডনির সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা মহিলাদের চেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু যদি পরিবারে কেউ ৩০-৩৫ বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন কিডনির কোন সমস্যা হয়নি। সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায় কিডনির সমস্যা হবে না। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ ঘন ঘন পরীক্ষা করা উচিত। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নির্ণয়ের পাঁচ বছর পর থেকে প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের পরীক্ষা করা উচিত রোগ নির্ণয়ের পর থেকে প্রতি বছর। যত তাড়াতাড়ি কিডনির ক্ষতি শনাক্ত করা যাবে তত তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিয়ে কিডনি ভালো রাখা সম্ভব। কিডনির ক্ষতি হলেও, খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

১. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখুন।

২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। অর্থাৎ ব্লাড প্রেশার ১৩০/৮০ সস ঐম-এর নিচে রাখুন। নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ওজন কমানো। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট ব্যায়াম করা। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করা। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও কমাতে ওষুধেরও প্রয়োজন হতে পারে।

৩. খাবারে যেনপ্রোটিন ও লবণের পরিমাণ কম থাকে। অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। এতে কিডনির সমস্যা আরও খারাপ হতে পারে। ক্যালরির ১০ শতাংশ প্রোটিনেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।

৪. যেকোনো ধরনের ব্যথার ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা। ব্যথার ওষুধ কিডনি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।  যেকোনো ধরনের মূত্রাশয় বা কিডনি সংক্রমণের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। কিডনি ক্ষতি হওয়া রোধ করতে পারলে ডায়াবেটিস থাকলেও কিডনির রোগ হওয়া থেকে বিরত থাকা সম্ভব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877