স্বদেশ ডেস্ক:
শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে নয়াদিল্লি নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যা তাদের জন্য বেশ জটিল হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি শুধুমাত্র আইনি বাধ্যবাধকাতেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক কৌশলের ব্যাপার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়টি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে একটি ভুল সিদ্ধান্তে অনেক কিছু হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে এখন উভয় সংকটে আছে ভারত। কারণ ভারত যদি হাসিনাকে প্রত্যার্পণ করে, তাহলে সমালোচকরা বলবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে নয়াদিল্লি, যে সরকার সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন বন্ধ করতে পারেনি। এছাড়া শেখ হাসিনার প্রতি যারা অনুগত তাদের ’পর করে দিয়েছে’ এমন একটি চিত্রও তৈরি হবে।
অপরদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে যদি ভারত ফেরত না দেয়, তাহলে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। যার প্রভাব পড়তে পারে বাণিজ্য, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর।
এছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনেও এটির প্রভাব পড়বে। বিরোধী দলগুলো সরকারের রাজনৈতিক প্রাধান্য এবং স্পর্শকাতর বৈদেশিক নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। এছাড়া আঞ্চলিক পরাশক্তি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি ভারতের যে প্রতিশ্রতি আছে সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভূচিত্রের বিষয়টি আরও বড় পরীক্ষার মুখে পড়বে। যেখানে নির্বাসিত ব্যক্তি ও তাদের ফেরত চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
এছাড়া শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত এবার কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সামনে এ ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়লে দেশটি কী করতে পারে সেটি পরিষ্কার হবে।
স্টেটসম্যান বলছে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানানোর পাশপাশি, ভারতকে এই বিষয়টির মানবিক দিক বিবেচনা করতে হবে। তারা শেখ হাসিনার মতো পুরোনো বন্ধুকে ফেরত দেবে কিনা সেটিও দেখার বিষয়। তবে এই মুহূর্তে, ভারত নীরব কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারে। যেটির মাধ্যমে কোনো উত্তেজনা তৈরি না করে উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান করা যাবে।